ইলেকট্রিক স্কুটারে (Electric Scooter) আগুন ধরার ঘটনা ভারতীয়দের মনে ভয় ধরাচ্ছে! যে বাজারটা গত বছরের শেষ থেকে চলতি বছরের শুরুর কয়েকটা মাস ঊর্ধ্বমুখী ছিল, সেই বাজারই এখন তরতর করে নামতে শুরু করেছে। তার সবথেকে বড় উদাহরণ হল, ওলা-র ইলেকট্রিক স্কুটারের বিক্রিবাট্টায় আর একবার পতন। জুন মাসে ওলা ইলেকট্রিকের বিদ্যুচ্চালিত স্কুটার বিক্রির পরিমাণ অনেকটাই কমেছে। এই ক্যাটেগরিতে এক সময় রাজ করতে থাকা ওলা ইলেকট্রিক (Ola Electric) জুন মাসে চতুর্থ স্থানে চলে এসেছে। ভাবিশ আগরওয়ালের এই ই-স্কুটার প্রস্তুতকারক সংস্থাটির গত জুন মাসে (30 জুন পর্যন্ত) মাত্র 5,869টি ইলেকট্রিক স্কুটারের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। বাহন ডেটা থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, জুন মাসে দেশের ইলেকট্রিক দু-চাকা গাড়ির সেগমেন্টে প্রথম স্থানে রয়েছে ওকিনাওয়া অটোটেক, যারা 6,975টি ই-স্কুটার বিক্রি করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, অ্যাম্পায়ার ভেহিকল প্রাইভেট লিমিটেড, যারা 6,534টি ইলেকট্রিক স্কুটার বিক্রি করেছে। তৃতীয় স্থানে এসেছে হিরো ইলেকট্রিক, যারা 6,486 ইউনিট ইভি বিক্রি করেছে। এদিকে ওলার পরে অর্থাৎ পঞ্চম স্থানে রয়েছে অ্যাথার এনার্জি। এই সংস্থার ই-স্কুটার বিক্রির হারও অনেকটাই কমেছে। গত মে মাসে 3,797 ইউনিট রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল অ্যাথার এনার্জি-র ইলেকট্রিক স্কুটারের। জুন মাসে সেটাই আবার হয়ে যায় 2,419 ইউনিট।
গত এপ্রিল মাসেও ভারতের টপ ইভি প্লেয়ার ছিল ওলা ইলেকট্রিক। সে মাসে সবথেকে বেশি পরিমাণে দেশে Ola S1 Pro স্কুটারটির রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছে না ভাবিশ আগরওয়ালের সংস্থার। ক্রমাগত আগুন ধরার ঘটনাই যেন মানুষকে ওলা-র ইলেকট্রিক স্কুটার কেনা থেকে বিরত রাখছে। পরিসংখ্যান বলছে, 30 মে-র হিসেব অনুযায়ী ওলার রেজিস্ট্রেশন নম্বর এক ধাক্কায় 30% কমে গিয়েছে। মে মাসে ওকিনাওয়া 9,302 ইউনিট ইলেকট্রিক স্কুটার বিক্রি করেছিল, যেখানে ওলা তার S1 Pro মডেলটির 9,225 ইউনিট বিক্রি করেছিল।
ওলা ইলেকট্রিক দাবি করছে, জুন মাসে তাদের সাপ্লাই চেইন সংক্রান্ত একাধিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। বিশেষ করে এই মাসটিতে সেল শর্টেজ ব্যাপক ভাবে লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে তাদের দাবি। একটি বিবৃতিতে সংস্থাটি লিখছে, “এই মাসে আমরা কাস্টমার সার্ভিস আরও উন্নত করার দিকে ফোকাস করেছিলাম এবং আমাদের টার্নঅ্যারাউন্ড টাইম 48 ঘণ্টা করতে সক্ষম হয়েছি। জুলাই মাস থেকে আমরা আশা করছি, সাপ্লাই চেন সংক্রান্ত এই সমস্যার সমাধান হবে এবং আমাদের স্কুটারের বুকিংও হবে ব্যাপক হারে।”
তবে বিশেষজ্ঞরা এই তত্ত্ব মানতে একপ্রকার নারাজ। তাঁদের দাবি, দেশে যে হারে ইলেকট্রিক স্কুটারগুলিতে আগুন ধরছে, তাতে ক্রেতারা রীতিমতো ভয় পাচ্ছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফে ইলেকট্রিক স্কুটারে আগুন ধরার কাণ্ডে যে বিশেষজ্ঞের কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছিল, তাতেও জানা গিয়েছিল ইলেকট্রিক স্কুটারগুলির ব্যাটারি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কারণেই এই আগুন ধরার ঘটনাগুলি ঘটছে।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে ভারতে একটি টাটা নিক্সন ইলেকট্রিক গাড়িতেও আগুন ধরে যায়। যদিও সেই ইভি-টিতে কী কারণে আগুন লেগেছিল, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।