স্থানীয় ভাবে লিথিয়াম আয়ন সেল (Lithium ion Cell) তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়ে ওলা ইলেকট্রিক (Ola Electric)। আর তার ফলে সবথেকে বেশি উপকার হতে চলেছে গ্রাহকরা। সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, ওলা ইলেকট্রিক দেশে লিথিয়াম আয়ন সেল প্রস্তুত করার ফলে তাদের বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির দাম 25% কমে যাবে। এই মুহূর্তে ওলার ঝুলিতে একটাই মাত্র স্কুটার রয়েছে। সেই Ola S1 Pro স্কুটারের দাম 1.53 লাখ টাকা, যা বেঙ্গালুরুর অন-রোড প্রাইস। একটা ইলেকট্রিক স্কুটারের দাম বেশি হয় মূলত তার ব্যাটারির কারণেই। কারণ, দেশে ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য ব্যবহৃত লিথিয়াম আয়ন সেল সে ভাবে তৈরি হয় না। ওলা যদি তা দেশে তৈরি করার পথেই হাঁটে, তাহলে ব্যাটারির দাম অন্তত 40% কমে যাবে। আর তার ফলেই সামগ্রিক ভাবে সংস্থার ই-স্কুটারগুলির দাম 25% কমবে।
এখন ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের দাম যদি 25% কমে যায়, তাহলে Ola S1 Pro ই-স্কুটারটির দামই শুরু হবে 1.2 লাখ টাকা থেকে, যা উপভোক্তাদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় হতে চলেছে। যদিও ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের দাম কমার জন্য আমাদের এখনও একটা বছর অপেক্ষা করতে হবে। ওলা তার গিগাফ্যাক্টরিতেই লিথিয়াম আয়ন সেলগুলি তৈরি করবে বলে জানা গিয়েছে, যার প্রডাকশন শুরু হবে 2023 সালে।
চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান এবং জাপান থেকে ভারতের ইলেকট্রিক স্কুটারের জন্য লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি নিয়ে আসা হয়। ফলে স্কুটারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বস্তুটি যখন আমদানি করা হয়, স্বাভাবিক ভাবেই সেই খরচটা সামগ্রিক ভাবে স্কুটারের দামের উপরে চেপে যায়। তাই ইলেকট্রিক স্কুটারের দামও বেশি হয় ভারতে। এখন স্থানীয় ভিত্তিতে ভারতে লিথিয়াম আয়ন সেল প্রস্তুত হলে শুধু ওলা ইলেকট্রিক নয়, সমস্ত কোম্পানিরই ই-স্কুটারের দাম কম হবে।
স্থানীয় ভাবে লিথিয়াম আয়ন সেল তৈরির আর একটি সুবিধা হল সেফটি। এই সেলগুলি যদি ভারতের দুর্গম রাস্তার কথা চিন্তাভাবনা করে তৈরি করা হয়, বিশেষ করে গরমকালে তাহলে ইদানিং কালের মতো ঘনঘন আগুন লাগার ঘটনাও সামনে আসবে না। লিথিয়াম আয়ন সেল নিয়ে ওলা ইলেকট্রিকের তরফেবলা হচ্ছে, “এই প্যাকগুলি সর্বপ্রথম আমাদের দু-চাকা গাড়িতেই দেওয়া হবে। রফতানি করারও চিন্তাভাবনা রয়েছে আমাদের, দেশের অর্থাৎ ডোমেস্টিক মার্কেটের চাহিদা মিটলে তবেই। ভারতে ইলেকট্রিক স্কুটারের দাম কম করতে হলে সর্বাগ্রে দেশে ব্যাটারি ডেভেলপ করতে হবে, পাশাপাশি সুরক্ষার দিকটাও নিশ্চিত করতে হবে।”
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওলা ইলেকট্রিকের এক কর্মকর্তার কথায়, “স্থানীয় ভাবে সেলগুলির উৎপাদন ইভিগুলিকে আরও নিরাপদ করে তুলবে। কারণ, সেগুলি ভারতের স্থানীয় অবস্থার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে। কেউ যতই চেষ্টা করুক না কেন, বিশ্বের সেরা ব্যাটারি প্রস্তুতকারকও এখানকার কঠোর পরিবেশের কথা মাথায় রেখে ব্যাটারি তৈরি করবে না। ভারতই এই ব্যাটারি তৈরির শ্রেষ্ঠ জায়গা। লিথিয়াম আয়ন সেলগুলি আমাদের খরচ, গুণমান এবং নিরাপত্তা সমস্ত ক্ষেত্রেই অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি সুবিধা দেবে।”