Facebook Negative Testing: এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, এমন কিছু অ্যাপস রয়েছে যেগুলি আপনার ফোনের ব্যাটারি গিলে খেয়ে নেয়! প্রথমে মারাত্মক প্রভাব ফেলে, তারপর ধীরে ধীরে ফোনটাকে বাতিলের খাতায় পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু Facebook-এর প্রাক্তন এক কর্মী যে চাঞ্চল্যকর দাবি করে বসলেন, তা শুনে সত্যিই তাজ্জব হয়ে যেতে হয়। তিনি বলছেন, ইচ্ছাকৃত ভাবেই স্মার্টফোনের ব্যাটারি খেয়ে নেয় সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটটি। ডেটা সায়েন্টিস্ট জর্জ হ্যাওয়ার্ড এক সময় Facebook-এ কাজ করতেন। তাঁর কথায়, সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি নেগেটিভ টেস্টিং নামক একটি অনুশীলন করে থাকে, যা গোপনে একজন ব্যবহারকারীর ফোনের ব্যাটারির সব শক্তি শেষ করে দেয়।
নিউইয়র্ক পোস্টের কাছে এই বিস্ফোরক অভিযোগগুলি করেছেন ডেটা সায়েন্টিস্ট হ্যাওয়ার্ড। তিনি জানিয়েছেন, এই নেগেটিভ টেস্টিং Facebook অ্যাপের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বা সমস্যা পরীক্ষা করার জন্য চালানো হয়— অ্যাপটি কত দ্রুত চলছে, কত দ্রুত একটা ছবি লোড হচ্ছে, এমনই নানাবিধ জরুরি বিষয়। একটা কোম্পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে, তাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এই পরীক্ষার সবথেকে খারাপ দিকটি হল, ব্যবহারকারী জানেন না যে, অনুমতি না নিয়েই তাঁর ফোনে অ্যাপের পারফরম্যান্স সংক্রান্ত বিভিন্ন পরীক্ষা করা হচ্ছে। কোম্পানির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় হেওয়ার্ড অনুশীলনটিকে ক্ষতিকর বলে অভিহিত করেছেন। সামনের দিনে এই অভ্যাস আরও ক্ষতিকারক হতে পারে বলে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি।
হ্যাওয়ার্ডের কথায়, “আমি একবার আমার ম্যানেজারকে বলেছিলাম, এর ফলে তো কারও ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু তিনি তার উত্তরে বলেছিলেন, কয়েকজনের ক্ষতি আসলে অনেকজনের ক্ষেত্রে ভাল হতে পারে।” ম্যানহ্যাটন ফেডারাল কোর্টে Facebook-এর এই ক্ষতিকারক অনুশীলনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন 33 বছরের হ্যাওয়ার্ড। মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, নেগেটিভ টেস্টিংয়ে অংশ নিতে রাজি না হওয়ার কারণেই তাঁরে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তিনি Facebook-এর Messenger অ্যাপে কাজ করতেন। হ্যাওয়ার্ড বলছেন, “আমি ওই নেগেটিভ টেস্ট করতে একবার রাজি হইনি। দেখলাম, আপনি যদি আপনার বসকে বলেন যে, এটা বেআইনি, তাহলে তা খুব ভাল চোখে দেখা হয় না।”
Facebook-এর এই নেগেটিভ টেস্টিংয়ে ঠিক কতজন ইউজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সেই সংখ্যাটাও হ্যাওয়ার্ডের জানা। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর হাতে একটি ইন্টারনাল ট্রেনিং ডকুমেন্ট ধরানোর পরেই নেগেটিভ টেস্টিং শুরু করে দেয় Facebook। সেই ডকুমেন্টের টাইটেলে লেখা হয়েছিল, “কীভাবে চিন্তাশীল নেতিবাচক পরীক্ষা চালানো যায়”। সেই নেগেটিভ টেস্টিংয়েই গ্রাহককে না-জানিয়ে তাঁর স্মার্টফোন নিয়েই রিমোট উপায়ে নানাবিধ এক্সপেরিমেন্ট করে থাকে ফেসবুক। হ্যাওয়ার্ড এই ডকুমেন্টটিকে বলছেন, “আমার কর্মজীবনে আমি এর থেকে ভয়ঙ্কর ডকুমেন্ট দেখিনি।”
প্রাক্তন কর্মীর এহেন গুরুতর অভিযোগের বিরুদ্ধে Facebook-এর প্যারেন্ট কোম্পানি Meta-র তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।