বাবার ফোন থেকে গেম খেলছিল ছেলে। হঠাৎ দেখা গেল, ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) থেকে 39 লাখ টাকা গায়েব। ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটি ঘটেছে আগ্রার (Agra) তাজনগরী এলাকায়। বাবা যখন বুঝলেন যে, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে 39 লাখ টাকা হাওয়া সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেন। আগ্রা পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ কদন্ত শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির ফোন থেকে তাঁর পুত্র ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া (Battlegrounds Mobile India) গেমটি খেলছিলেন। সংবাদমাধ্যম নিউজ় 18 এই খবরটি সর্বপ্রথম প্রকাশ করে, যা নিয়ে দেশজুড়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে,আগ্রার খান্দোলি এলাকায় থাকে ওই পরিবারটি। পরিবারের কর্তা অর্থাৎ ওই ব্যক্তি ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন জওয়ান। তিনি অভিযোগ করেছেন, অনলাইন জালিয়াতির মাধ্যমে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে 39 লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। কীভাবে ব্যাঙ্ক থেকে এই বিরাট পরিমাণ টাকা গায়েব হয়ে গেল তা নিয়ে তিনি অবাক, পুলিশের কাছে অভিযোগ করে সে কথাই জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে যখন তিনি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে ফোন করলেন, তখন বলা হল, প্রথমে ওই বিরাট অঙ্কের অর্থ পেটিএম থেকে ‘কোডা পেমেন্টে’ যায় এবং পরবর্তীতে তা সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়।
অভিযোগ, সেই অ্যাকাউন্টটি ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়ার ডেভেলপার সংস্থা ক্রাফ্টনের। দক্ষিণ কোরিয়ান এই সংস্থাটি BGMI-এর পাশাপাশি PUBG Mobile-এরও নির্মাতা, যে গেমটি ভারতে গত 2020 সালে ব্যান করা হয়েছিল। ভয়ঙ্কর এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে এই প্রথম বার নয়। এর আগেও দেশে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে এমনতর গেমিং কেস হয়েছে।
এর আগে একাধিক কেস লাইমলাইটে এসেছে, যেখানে বাচ্চারা মোবাইল গেম খেলার পর অভিভাবকের অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল অর্থ গায়েব হয়েছে। তবে আগ্রার এই ঘটনা যেন সকলের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে। ছেলে অনলাইনে গেম খেলছিল, আর সেই সময় বাবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে হাওয়া 35 লাখ টাকার মতো একটা বিরাট অ্যামাউন্ট। আগে এমনই বিরাট টাকা গেম খেলার সময় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হওয়ার খবর সামনে এসেছিল। সে বার হরিপর্বত এলাকা থেকে এক ব্যক্তি 30 লাখ টাকা খুইয়েছিলেন।
অনলাইনে গেম খেলার সময় এভাবে অজান্তেই টাকা গায়েব হওয়ার ঘটনার পাশাপাশি জালিয়াতরা গেমারদের নানাবিধ কাজ করতে বলেও প্রতারিত করে থাকে। বিভিন্ন ইন-গেম লেভেল বা চাহিদা পূরণের টোপ দেখিয়েই মূলত গেমারদের কাছে টাকা চাওয়া হয়। আর সেই লোভে পা দিয়েই শেষমেশ টাকা খোয়াতে হয় মানুষজনকে।
এখন এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির সবথেকে বড় সমাধানটি হল, বাচ্চাদের গেম খেলা যেভাবেই হোক বন্ধ করতে হবে। আর তা যদি একান্তই সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে বাচ্চাকে গেম খেলতে দেওয়ার সময় সর্বদা সজাগ থাকতে হবে ফোন নিয়ে।