পরপর তিনটে মিসড কল, ব্যস! ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে মুহূর্তে গায়েব মোটা অঙ্কের টাকা। দিল্লির 35 বছর বয়সী এক মহিলার সঙ্গে সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটেছে। পেশায় ওই মহিলা একজন আইনজীবী। অ্যাকাউন্ট থেকে মোট কত টাকা খোয়া গিয়েছে, সেই অঙ্কটা জনসমক্ষে আনতে চাননি মহিলা। তবে এই ধরনের অদ্ভুত প্রতারণার ঘটনা যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ধরনের প্রতারণার নাম ‘সিম সোয়্যাপ স্ক্যাম’ (SIM Swap Scam)। ফোনে মিসড কল আসা এবং পরবর্তীতে কোনও একবার সেই কল রিসিভ করা থেকেই এই প্রতারণা কাজ করে। জালিয়াতরা এভাবে আপনার ডুপ্লিকেট সিমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং তা দিয়ে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে অন্য অনেক কিছুই ব্যবহার করে। কীভাবে এই প্রতারণাচক্র কাজ করে, কীভাবেই বা আপনি সুরক্ষিত থাকবেন, সেই সব তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
SIM Swap Scam: কীভাবে এই প্রতারণাচক্র কাজ করে?
এই প্রতারণাচক্র কীভাবে কাজ করে, তা জানতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে মহিলার সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল? দিল্লির ওই আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, অজ্ঞাত একটি ফোন নম্বর থেকে তিনি পরপর তিনটি মিসড কল পান। একবারও তিনি ফোন করেননি অর্থাৎ রিটার্ন কল করেননি। তারপরই মহিলার ফোনে একটি মেসেজ আসে। সেখানে লেখা হয়, অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। সবথেকে চিন্তার বিষয়টি হল, তিনি কখনও কারএ সঙ্গে OTP বা অন্য কোনও ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করেননি। কিন্তু তারপরেও তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব টাকা।
মহিলা অভিযোগ করেছেন, গত 18 অক্টোবর তাঁর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছিল। স্থানীয় প্রশাসনকে তিনি জানিয়েছিলেন, কয়েক লাখ টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে মুহূর্তের মধ্যেই গায়েব হয়ে যায়। তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, মোট তিনবার একই নম্বর থেকে তাঁর ফোনে কল আসে। পরবর্তীতে তিনি যখন অন্য একটি নম্বর থেকে কল ব্যাক করেন, তাঁকে বলা হয় এটি ক্যুরিয়ার ডেলিভারির নম্বর।
ঘটনার তদন্ত করছেন যে অফিসার, তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে বলেছেন, “তিনি অভিযুক্তের সঙ্গে কেবল তাঁর বাড়ির ঠিকানা শেয়ার করেছিলেন। ভেবেছিলেন, বন্ধুর কাছ থেকে কোনও প্যাকেজ পাবেন এবং তিনি তা পেয়েও গিয়েছেন। তারপরেই তাঁর ব্যাঙ্কের তরফ থেকে একটি মেসেজ আসে, যেখানে অননুমোদিত টাকা তোলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।”
অফিসার জানিয়েছেন, তদন্তে মহিলার ফোন থেকে কিছু অস্বাভাবিক ব্রাউজ়িং হিস্ট্রি লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা তিনি কখনও করেনইনি। তিনি কিছু ফিশিং লিঙ্ক এবং কিছু UPI রেজিস্ট্রেশন টেক্সটও পেয়েছিলেন বলে ওই অফিসার উল্লেখ করেছেন। এখান থেকে একটা বিষয় বোঝা গেল যে, SIM Swap প্রতারকরা একজন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়েই যাবতীয় কাজ করে। সেই তথ্য তারা কারও সঙ্গে সহযোগিতায় মোবাইল নেটওয়ার্কে ব্যবহার করে ডুপ্লিকেট সিমের অ্যাক্সেস পেতে পারে।
সুরক্ষিত থাকার উপায়
1) কখনও আপনার ব্যক্তিগত তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
2) আধার বা প্যান সংক্রান্ত ব্যক্তিগত নথি, তার নম্বর অনলাইনে কোনও প্ল্যাটফর্মেই শেয়ার করবেন না।
4) আপনার সিম কার্ড কাজ না করলে টেলিকম অপারেটরের কাছে বিষয়টি জানান।
5) সর্বোপরি, OTP কখনও ব্যাঙ্কের কর্মী, ব্যাঙ্কিং এজেন্টের সঙ্গে ফোনে বা অনলাইনে শেয়ার করবেন না।