Air Conditioner Mistakes: এসি চালিয়ে এই ১০ ভুল করছেন না তো? খুব সাবধান, বড়সড় বিপদ হতে পারে…

AC Tips: এয়ার কন্ডিশনার অনেকেই ব্যবহার করেন। কিন্তু সঠিক নিয়ম মেনে কতজনই বা এসি ব্যবহার করেন। সাধারণ এসি চালাতে গিয়ে যে সব ভুল সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকা উচিৎ, সেগুলি এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

Air Conditioner Mistakes: এসি চালিয়ে এই ১০ ভুল করছেন না তো? খুব সাবধান, বড়সড় বিপদ হতে পারে...
প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 06, 2022 | 4:09 PM

গরম পড়তে না পড়তেই দেশের বেশির ভাগ ঘরে এয়ার কন্ডিশনার (Air Conditioner) চলতে শুরু করে দিয়েছে। কারও বাড়িতে চলছে উইন্ডো এসি, কেউ আবার স্প্লিট এসি চালাচ্ছেন। তবে যে যাই এসি চালান না কেন, সঠিক ভাবে এসি চালানোর কয়েকটা নিয়ম রয়েছে। আর সেই নিয়মগুলি না জেনে যদি আমরা ভুল ভাবে এসি চালাই, তাহলে বড়সড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারি। এয়ার কন্ডিশনার চালালেই হল না। তার থেকেও বড় কথা হল, ঠিক করে এসির ম্যানেজমেন্ট করা। ম্যানেজ যদি ঠিক ভাবে না করতে পারেন, তাহলে ইলেকট্রিক বিল বেশি আসতে পারে। সেই সঙ্গেই আবার অচিরেই আপনার এয়ার কন্ডিশনার তার কার্যক্ষমতা হারাতে পারে। ফলে এসি আপনার ঘর ঠিক করে ঠান্ডাও করতে পারবে না। এদিকে এত দাম দিয়েও একটা এসি কেনার পরে সেটি আপনার ঘর কেন ঠান্ডা করতে পারছে না, তার কারণও খুঁজতে ব্যর্থ হন আপনি। তৎক্ষণাৎ ডেকে বসেন একটা একজন মেকানিককে। তাই সচরাচর এসি চালাতে গিয়ে আমরা যে ভুলগুলি (AC Mistakes) করে থাকি, সেগুলি জেনে রাখা আপনার জন্য খুবই জরুরি। এসি সংক্রান্ত এমনই ১০টি ভুল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

১) ঠিকঠাক সাইজের এসি না কেনা

এসি কেনার আগে আপনার বোঝা উচিৎ যে, আপনার ঘরের সঙ্গে খাপ খেতে পারে কোন সাইজ়ের এয়ার কন্ডিশনার। আপনার ঘরের সাইজ়ের তুলনায় যদি একটা ছোট এসি কেনেন, তাহলে তা বাতাসকে ঠান্ডা করতে অতিরিক্ত সময় নিয়ে নেয়। এর ফলে এয়ার কন্ডিশনার দ্রুত খারাপ হতে পারে এবং ইলেকট্রিক বিলও আসতে পারে খুব বেশি। আবার এর উল্টোটাও যদি হয়, তাহলেও বিপদ। তাই কত টনের এসি কিনবেন, সেটা আগে ঠিক করুন।

২) কখনও এসির ফিন ও কয়েল পরিষ্কার না করা

এয়ার কন্ডিশনারের কয়েল এবং ফিন ঘরের ভিতরে ইভাপোরেটর এবং বাইরে কনডেন্সারগুলিকে তাপ শোষণ এবং ছেড়ে দিতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়াটি অত্যাবশ্যক। কিন্তু ধূলো এবং ময়লা এই প্রক্রিয়াটিকে বাধা দেয় অনেক সময়। তাই গরমকাল শুরু হতেই আপনার এসির ফিন ও কয়েল পরিষ্কার করাটা খুবই জরুরি। সেই সঙ্গেই আবার যখন ঝড় হবে বা খুব জোরে হাওয়া দেবে, তার পরেও পরিষ্কার করা উচিৎ এসির ফিন ও কয়েল।

৩) এয়ার ফিল্টারকে উপেক্ষা করা

নতুন এসি কেনা বা পুরনো এসি একটা সিজনের পর ব্যবহারের ছয় মাসের মধ্যেই তার এয়ার ফিল্টারে ব্যাপক ভাবে নোংরা জমে যায়। আর এয়ার ফিল্টারে নোংরা জমে যাওয়া মানে সেখান থেকে ভাল করে হাওয়া পাস করতে পারবে না। ভাল করে এয়ার ফিল্টারে হাওয়া পাস না করতে পারলে সেই এসি ঘর ঠান্ডা করতে অনেক বেশি সময় নিয়ে নেয়। যার ফলে ইলেকট্রিক বিলের পিছনেই আপনাকে অনেক টাকা খরচ করতে হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসির এয়ার ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করলে তার কার্যক্ষমতা অন্তত ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়।

৪) থার্মোস্ট্যাট আপডেট না করা

এসির থার্মোস্ট্যাট নিয়েও খুব যত্নবান হওয়া উচিৎ। বিশেষ করে আজকাল প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাটের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট থাকলে সারাদিনে আপনার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে সেই এসির তাপমাত্রা সেট করে রাখতে পারেন। এই মুহূর্তে বাজারে একাধিক প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হল গুগল নেস্ট-এর একটি। এই ধরনের থার্মোস্ট্যাট আপনার ঘরের পরিবেশটা খুব সহজেই ধরতে পারে। এরকম একটা প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট থাকলে আপনি অ্যাপ থেকেও এসির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আপনার এসিতে যদি এমনতর স্মার্ট বা প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট না থাকে, তাহলে এখনই সেটি আপডেট করিয়ে নিন। এর ফলে আপনি অনেক টাকা বাঁচাতে পারবেন এবং সঠিক ঠান্ডা হাওয়াও পাবেন।

৫) এসির ড্রেন চেক না করা

একাধিক এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম রয়েছে, যেগুলি ড্রেন ব্যবহার করে কন্ডেনসেশন সংগ্রহ এবং বাড়ির বাইরে জল চ্যানেলিংয়ের মাধ্যমে আদ্রতা সমস্যার প্রতিরোধ করে। এই ড্রেন একদিকে যেমন সুবিধাজনত, আর একদিকে তেমনই যদি এটিকে ঠিক করে ব্যবহার না করেন, তা হলে প্রভূত সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। ড্রেন থেকে যদি জল ওভারফ্লো করতে থাকে, তাহলে আপনার বাড়ি ভাসিয়ে দিতে পারে। এর ফলে চিরতরে আপনার এসিটা খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই প্রতি বছর আপনি যদি এসির ড্রেন লাইন পরিষ্কার করেন, তাহলে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।

৬) তাপমাত্রা খুবই কমে সেট করে রাখা

এসি চালানোর ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মানুষই যেটা করে থাকেন, তা হল কম তাপমাত্রায় সেটিকে চালিয়ে রেখে। এসির সেই শুরুর লগ্ন থেকে আজ ইস্তক এই ভ্রান্ত ধারণাটা প্রায় চলেই আসছে – যত কম তাপমাত্রায় এসি চালানো হবে, ততই তা দ্রুত ঠান্ডা ঘর ঠান্ডা করবে। একমাত্র বন্ধ করা ছাড়া প্রায় সব সময়ই একটা এয়ার কন্ডিশনার ফুল পাওয়ারে চলে। এক ডিগ্রি কমাতেও একটা এসি ঠিক যতটা কাজ করে, ২০ ডিগ্রির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। তাই আপনার প্রয়োজন যেখানে চাইছেন, ঠিক সেখানেই থার্মোস্ট্যাট প্রোগ্রাম করুন। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের দাবি, ২০ থেকে ২৪ ডিগ্রির মধ্যেই এসি চালানো সব দিক থেকে ভাল।

৭) রিপ্লেসমেন্টকে উপেক্ষা করা

এয়ার কন্ডিশনার রিপ্লেস করার খরচটি অনেক বেশি হলেও, আপনার তা উপেক্ষা করা উচিৎ নয়। দীর্ঘ দিন যদি আপনি একটা এসি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব সেটিকে বদলে নিন। পুরনো এসি বেশি দিন ব্যবহার করতে যাবেন না। পুরনো এয়ার কন্ডিশনার বারংবার সারাতে খরচাও বেশি হয়। তারপরে আবার তা থেকে বেশি ইলেকট্রিক বিলও আসে। এই সব খুচখাচ খরচ আপরনি তখনই বাঁচাতে পারবেন, যখন একটা নতুন এসি কিনবেন। তার থেকেও বড় কথা হল, বারবার এসি রিপেয়ারের খরচাতেই আপনার একটা নতুন এসি হয়ে যেতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, একটা এসি-র বয়স ১০-১২ বছর হয়ে গেলেই সেটিকে বদলে ফেলুন।

৮) চেক-আপ না করা

যেমনটা আমরা আগেই জানিয়েছি, এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করে, যা ঘর থেকে তাপ শোষণ করে এবং বাইরে ছড়িয়ে দেয়। এই রেফ্রিজারেন্ট কমপাউন্ড এয়ার কন্ডিশনার অপারেশনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি খারাপ হয়ে গেলেই আপনাকে মোটা টাকা খরচ করতে হতে পারে। তাই একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানকে দিয়ে আপনার এয়ার কন্ডিশনার, বিশেষ করে তার রেফ্রিজারেন্টের হেল্থ চেকআপ করিয়ে নিন।

৯) বাড়িতে কেউ না থাকলেও এসি ব্যবহার করা

অনেকেই এয়ার কন্ডিশনারের তাপমাত্রা শিডিউল করেন। আর এই তাপমাত্রা শিডিউল করতে গিয়েই হয়ে যায় অনেক ভুলচুক। অনেক সময় দেখা যায়, বাড়িতে কেউ নেই অথচ এসি চলছে। এর ফলে ইলেকট্রিক বিল আসতে পারে অনেক বেশি। এছাড়াও সারাদিন এসি চালানোটা, তার স্বাস্থ্যের পক্ষে কোনও দিক থেকেই ভাল নয়।

১০) দরজা-জানলা বন্ধ করার কথা বেমালুম ভুলে যাওয়া

এসি চালানোর আগে অনেক সময়ই আমরা দরজা-জানলা বন্ধ করতে ভুলে যাই। এসি চালানোর আগে অতি অবশ্যই ঘরের দরজা-জানলা কিছু ক্ষণের জন্য খুলে রাখুন, যাতে ঘরের সব গরম হাওয়া বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এসি চালিয়ে অতি অবশ্যই ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করুন। তা না হলে ঘর দ্রুত ঠান্ডা হবে কীভাবে।