Apple Watch যে বিভিন্ন সময়ে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কীভাবে মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে, তা ইন্টারনেট খুললেই জানা যায়। সেই সুবিশাল তালিকায় নবতম সংযোজন আর এক ব্যক্তি। ক্লিভল্যান্ডের সেই ব্যক্তি দাবি করেছেন, অ্যাপল ঘড়ির জন্যই তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। তাঁর শরীরের ব্লাড অক্সিজ়েন লেভেল হঠাৎ করেই নেমে গিয়েছিল। Apple Watch যথা সময়ে সেই ড্রপটি ডিটেক্ট করার ফলেই তিনি আজ বেঁচে আছেন বলে জানিয়েছেন ব্যক্তিটি। News 5-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্লিভল্যান্ডের বাসিন্দা কেন কুওনিহ্যান তাঁর অ্যাপল ঘড়িটি ব্যবহার করেন মূলত স্লিপ ট্র্যাকিং এবং ওয়ার্ক আউট সেশনের সময় অন্যান্য হেলথ ইন্ডিকেটরগুলি পরখ করতে।
সংবাদমাধ্যম News 5-এর কাছে তিনি দাবি করেছেন, “আমি খুবই অ্যাক্টিভ এবং ক্যালোরি ঝরাতে আমি যা-যা করি বা করছি, তার সবকিছু ট্র্যাক করি এই অ্যাপল ওয়াচের সাহায্যে। ওয়ার্ক আউট শেষ হলেই আমি এটা চার্জে বসিয়ে দিই, যাতে সারাদিন পরে থাকতে পারি। স্লিপ ট্র্যাক করতে আপনি বিছানাতেও এটা পরে থাকি।” কিন্তু গত অক্টোবরে তাঁর Apple Watch অন্যরকমের ইঙ্গিত দিতে থাকে। কুওনিহ্যান বললেন, “গত অক্টোবরে আমি একটা অ্যালার্ট পাই যে, আমার শ্বাস-প্রশ্বাস বেড়ে গিয়েছে। প্রতি মিনিটে আপনার একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্বাস থাকে, কিন্তু আমি হঠাৎই 14 থেকে 17 বা 18-তে চলে গিয়েছিলাম।”
প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন যে, হয়তো শরীর অসুস্থ বলেই অ্যালার্ট দিয়েছে। তাই তিনি বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নেন। তাঁর কথায়, “আমার স্ত্রী আমাকে একটা ফোন করতে বলে আমার ছেলের কাছে। আমাকে আউটপেশেন্ট কেয়ারে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর তাঁরা আমার একটি এক্স-রে করেন এবং ব্রঙ্কাইটিসের জন্য আমাকে কিছু ওষুধ দিয়েছিলেন।” কিন্তু সেই জাদুকর অ্যাপল ওয়াচ তাঁকে আবারও ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিছু একটা যে সমস্যা রয়েছে, তা বারবারই বোঝানোর চেষ্টা করেছিল হাতঘড়িটি।
কুওনিহ্যান বললেন, “আমার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা 90-এর মাঝামাঝি থাকে। যেটা 95 বা তার বেশি হওয়ার কথা, সেটা হঠাৎ করেই 80-র মাঝামাঝি হয়ে যায়। রাত তখন 10টা। আমার স্ত্রী খুব চিন্তায় পড়ে যান। আমি তখন ভাবছিলাম, এতটাই ক্লান্ত ছিলাম যে কখন বিছানায় একটু মাথা রাখব। কিন্তু আমার স্ত্রী এবং পুত্র চিন্তা থেকে একপ্রকার জোর করতে থাকে যে, আমাকে ইমার্জেন্সিতে যেতেই হবে।”
তারপর তাঁর শরীরের স্ক্যান করা হয়। সেই স্ক্যান করার পরেই তাঁর ফুসফুসে ব্লাড ক্লট দেখা যায়। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মেডিক্যাল ফিজ়িশিয়ান ডক্টর লুসি ফ্র্যানজিক দাবি করেছেন, “রক্ত জমাট বাঁধা বা ব্লাড ক্লট আসলে জীবনের জন্য একটা বড় হুমকি, যদি তারা তাড়াতাড়ি ধরা না পড়ে।” কুওনিহ্যান যোগ করলেন, “ডাক্তার আমাকে বলেছিলেন, সেই দিনই যদি বিষয়টা ধরা না পড়ত, তাহলে বড় কোনও বিপদ ঘটে যেতে পারত। 60% মানুষেরই এই স্টেজে এমন পরিস্থিতি থাকে। আমি ভাবছিলাম, সেই দিন যদি না উঠে ইমার্জেন্সিতে যেতাম, তাহলে হয় তো পরের দিন হয়তো আর উঠতামই না।”