প্রেমের দিন (Valentine’s Day) আজ। গোলাপ, চকোলেট, টেডি সব কিছু দেওয়ার পর আজ ‘তোমাকে ভালবাসি’ বলার দিন। আর এমনই এক ভালবাসা-মাখা একটা সময়ে অনলাইন ডেটিং (Online Dating) এবং দেশের সাম্প্রতিক প্রেম-পরিস্থিতি নিয়ে হাঁড়ির খবর তুলে ধরল একটি সমীক্ষা। ইদানিং ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমেও অনেকে ভালবাসা খুঁজে নিচ্ছেন। আর সেই সব ডেটিং অ্যাপ ও ওয়েবসাইটগুলি (Dating Apps And Websites) একাধিক নতুন ফিচার্স ও ইন্টারফেসে সেজে উঠছে, আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে সিঙ্গেলদের কাছে। কিন্তু নতুন একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, যে সব ভারতীয়রা অনলাইনে ডেটিং করছেন, সেই ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে ডেটিং প্রোফাইল সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে তাঁরা মোটেই সন্তুষ্ট থাকেন না। তারপরেও এবার তাঁদের সেই প্রোফাইলের খুঁটিনাটি আরও একাধিক তথ্য জানতে অনলাইনে সার্চ করে আরও খাটাখাটনি করতে হয়।
নর্টনলাইফলক-এর তরফে এই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হচ্ছে, দেশের অনলাইন ডেটারদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ (২৯ শতাংশ) ম্যাচ হওয়া পার্টনারকেও আনম্যাচ করে দেন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের বিরক্তিকর পোস্ট দেখে। অন্য দিকে আবার ৩৪ শতাংশ ভারতীয় অনলাইন ডেটার সম্ভাব্য সঙ্গীর প্রোফাইল ছবির সঙ্গে তাঁর ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মের ছবির মিল খুঁজে না পেলে আনম্যাচ করে দেন। শুধু তাই নয়, রিসার্চে দেখা গিয়েছে, ২২ শতাংশ অনলাইন ডেটার আবার সেই সম্ভাব্য সঙ্গীর পরিবার সম্পর্কে বিরক্তিকর পোস্ট খুঁজে পেলেও আনম্যাচ করে দেন।
ডেটিং অ্যাপে ম্যাচ হওয়া কোনও প্রোফাইলের সঙ্গে ডেটে যাওয়ার আগে দেশের অনলাইন ডেটাররা অনেককটা জিনিস খতিয়ে দেখে নেন। নর্টনলাইফলক-এর রিপোর্টে বলা হচ্ছে, সেই তালিকায় রয়েছে সম্ভাব্য সঙ্গীর ছবি, পরিবার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য, তাঁর পছন্দ-অপছন্দ ইত্যাদি। অনলাইন ডেটারদের মধ্যে ৬০ শতাংশ মানুষ এই সব তথ্য যাচাই করতে সোশ্যাল মিডিয়ার শরণাপন্ন হন, ৪৩ শতাংশ মানুষ চলে যান প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এবং সম্ভাব্য সঙ্গীর বন্ধু ও পরিবার-পরিজনের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল চেক করেন ৪০ শতাংশ অনলাইন ডেটার। এই সব তথ্য যাচাই করার পরে যদি সম্ভাব্য সঙ্গী সম্পর্কে কোনও অনলাইন ডেটারের মনে সন্দেহ জাগে, তাহলে তিনি তাঁর অজান্তে ব্যাকগ্রাউন্ড চেকের শিকার হওয়া ম্যাচ সম্পর্কে চিন্তা করেন। সার্ভে থেকে আরও একটি তথ্য জানা গিয়েছে যে, মাত্র ১৯ শতাংশ ভারতীয় অনলাইন ডেটিংয়ে তাঁদের ম্যাচ সম্পর্কে যাচাই করতে টাকা খরচ করেন।
“সমীক্ষা থেকে আমরা আবিষ্কার করেছি যে, ভারতীয় প্রাপ্তবয়স্কদের ৭৩ শতাংশ যাঁরা একটি রোম্যান্টিক সম্পর্কের মধ্যে রয়েছেন, তাঁরা তাঁদের বর্তমান বা প্রাক্তন সঙ্গীর জ্ঞান বা সম্মতি/অনুমতি ছাড়াই ডেটিং অ্যাপে চেক ইন করেছেন বলে মেনে নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ নিজেদের সম্পূর্ণ নাম বাদ দিয়ে অন্য কোনও নামে প্রোফাইল খুলে থাকেন। ডেটিং অ্যাপে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ, ব্যক্তিগত তথ্য ভুল হাতে গেলে এটি গ্রাহকদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে”, বলছেন ভারতে নর্টনলাইফলক-এর ডিরেক্টর সেলস ও ফিল্ড মার্কেটিং অফিসার রীতেশ চোপড়া।
সার্ভে থেকে আরও জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় প্রাপ্তবয়স্কদের ২৭ শতাংশ রয়েছেন, যাঁরা রোম্যান্টিক ইন্টারেস্টের মিউজ়িক অ্যাকাউন্টেও ঢুঁ মারেন। এমনকি ২১ শতাংশ এমন ইউজ়ারও রয়েছেন, যাঁরা সেই সম্ভাব্য সঙ্গীর পাবলিক অ্যাক্টিভিটির খোঁজ করতে পেপাল, গুগল পে, অ্যামাজ়ন পেস পেটিএম ইত্যাদি অ্যাকাউন্ট চেক করে থাকেন।
সমীক্ষায় প্রতি ৫ জনের মধ্যে ২ জন ভারতীয় বলেছেন যে, ঘটনাচক্রে তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় গিয়ে সম্ভাব্য সঙ্গীর পুরনো ছবি বা পুরনো কোনও পোস্ট দেখে লাইক করেছেন, হয় রোম্যান্টিক আগ্রহের কারণে বা সঙ্গীর প্রাক্তনের কোনও একটা স্বভাব যে তাঁর মধ্যেও রয়েছে, সেটি বোঝানোর জন্যে। অনলাইনে স্টক করার বিষয়টি যাঁরা স্বীকার করেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই জানিয়েছেন যে, বর্তমান বা প্রাক্তন সঙ্গীর লোকেশন তাঁরা কোনও একটা লোকেশন শেয়ারিং অ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে ট্র্যাক করে থাকেন।
১৮ থেকে ৩৯ বছরের মানুষজনের মধ্যে ৪৯ শতাংশ একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই প্রাক্তন বা বর্তমান সঙ্গীকে স্টক করে থাকেন, কারণ তাঁরা জানেন যে ধরা পড়বেন নান। ৪০ এবং তার বেশি বয়সীদের মধ্যে এই পরিসংখ্যান আবার ৪২ শতাশং। আশ্চর্যজনক ভাবে মাত্র ৩০ শতাংশ ভারতীয় পরিবার-পরিজন বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে নিজেদের লোকেশন শেয়ার করে থাকেন, যখন তাঁরা অনলাইনে কারও সঙ্গে আলাপ হওয়ার পরে শেষমেশ দেখা করতে যান।
আরও পড়ুন: টিন্ডার-প্রেম… App মুঝে অচ্ছে লগনে লগে
আরও পড়ুন: ‘আহারে মন’ ভিজুক প্রেমে, Date Dry হলে মন্দ কী?
আরও পড়ুন: ‘আসুন, ভালবাসার দিনে ভালবাসাকে আরামে নিঃশ্বাস নিতে দিই…’