দীর্ঘ 27 বছর পরিষেবা দেওয়ার পর 15 জুন থেকে অতীত হয়ে গিয়েছে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার (Internet Explorer)। মাইক্রোসফ্ট তার ব্যবহারকারীদের কাছে আহ্বান করেছে, দ্রুত এবং সুরক্ষিত ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে মাইক্রোসফ্ট এজ ব্যবহার করুন। তবে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের জনপ্রিয়তা যেন 90-2000 সালের মধ্যেই সীমিত রয়ে গিয়েছিল। তারপর গুগল ক্রোম থেকে শুরু করে মোজ়িলা ফায়ারফক্স এবং অপেরার মতো ব্রাউজ়ারের কাছে ফিকে হয়ে যায় এক্সপ্লোরারের জনপ্রিয়তা। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) এক এমন ইউজারের সন্ধান মিলল, যিনি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের স্মৃতিতে বানিয়ে ফেললেন সৌধ (Gravestone)। খরচ করলেন 25,000 টাকা।
দক্ষিণ কোরিয়ার জুং কি-ইউং নামের এক ব্যক্তি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বানিয়ে ফেলেছেন এই স্মৃতিসৌধ, যার জন্য থাঁকে 300 মার্কিন ডলার বা 25,000 টাকা খরচ করতে হয়েছে। ওই স্মৃতিসৌধের উপরে রয়েছে এপিটাফ, যাতে লেখা হয়েছে, “অন্যান্য ব্রাউজ়ার ডাউনলোডের জন্য তিনি ছিলেন খুব ভাল টুল।” ঠিক। তাঁর এই ধারণা কোনও দিক থেকেই ভুল নয়। দিনের পর দিন বহু ইউজার ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার এই কারণে ব্যবহার করতেন, যাতে তা থেতে দ্রুতগামী ক্রোম বা ফায়ারফক্সের মতো ব্রাউজ়ার ডাউনলোড করা যায়। সমস্ত উইন্ডোজ় ডিভাইসে প্রিলোডেড অবস্থায় থাকত ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। আর সেটি অন্যান্য ব্রাউজ়ার ডাউনলোডের সেরা রাস্তা ছিল।
সমাধিসৌধটি নির্মাণ করা হয়েছে একটি ক্যাফেতে। দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ দিকের শহর জেয়ঙ্গজুর সেই ক্যাফের মালিক স্মৃতিসৌধ নির্মাতা জুং কি-ইউংয়ের ভাই। স্মৃতিসৌধটি তৈরি হওয়ার পরই তার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে ভাইরাল হয়েছে।
মাইক্রোসফ্টের মৃত্যুর বিষয়ে স্মৃতির অলিগলি বেয়ে জুং সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের কাছে বলেছেন, “ব্যাপারটা অনেকটা নিতম্বে ব্যাথার মতো। কিন্তু আমি এটাকে প্রেম ও ঘৃণার সম্পর্কের মতোই দেখি। কারণ, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার একটা যুগকে দাবিয়ে রেখেছিল এক সময়ে।” এই স্মৃতিসৌধ তৈরির পিছনে মানুষকে মজা দেওয়াই ছিল জুংয়ের মূল উদ্দেশ্য। তবে যে ভাবে ছবিটা ভাইরাল হয়েছে, তা দেখে তিনি অভিভূত বলে আরও দাবি করেছেন।
তিনি আরও যোগ করেছেন, “ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারকে ধন্যবাদ জানানোর পিছনে এটা একটা বিশেষ কারণ। বিশ্বসেরা জোক তৈরি করার রসদও জুগিয়েছে এই ব্রাউজ়ার। এক্সপ্লোরারের মৃত্যুর জন্য অনুশোচনা রয়েছে ঠিকই, তবে এক ফোঁটাও মিস করব না। তাই তার অবসর নেওয়াটা আমার কাছে একটা ভাল মৃত্যুর খবরের সমান।”