হারিয়ে যাওয়া জিনিসপত্রের সন্ধান করতে এয়ারট্যাগ (AirTag) লঞ্চ করেছিল অ্যাপল (Apple)। কিন্তু সেই ট্র্যাকার যে খারাপ উদ্দেশ্য ব্যবহার করা হতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারেনি সংস্থাটি। চলতি সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপল এয়ার ট্যাগের সাহায্য নিয়েই বয়ফ্রেন্ডকে (Boyfriend) খুঁজে বের করে খুন করার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই মহিলা তাঁর প্রেমিককে ট্র্যাক করেছিলেন একটি অ্যাপল এয়ারট্যাগের মাধ্যমে। তাঁকে প্রতারিত করে অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর কারণেই প্রেমিককে তিনি খুন করেন বলে রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে-র একটি রিপোর্ট অনুসারে, মহিলা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর প্রেমিককে সন্দেহ করছিলেন। কিন্তু তাঁর গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারছিলেন না। আর তার জন্যই তিনি সাহায্য নেন একটি অ্যাপল এয়ারট্যাগের। পুলিশের কাছে পরবর্তীতে মহিলা স্বীকারও করে নেন যে, এয়ারট্যাগের মাধ্যমেই বয়ফ্রেন্ডকে ট্র্যাক করেন তিনি। কিন্তু খুন করলেন কেন? উত্তরে মহিলা জানিয়েছেন, প্রেমিকের প্রতি সন্দেহের বশেই তাঁর গতিবিধি ট্র্যাক করতে থাকেন তিনি। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁর বয়ফ্রেন্ড তাঁকে মিথ্যা বলে আসছিলেন।
শেষমেশ এয়ারট্যাগ দিয়ে যখন বয়ফ্রেন্ডকে ট্র্যাক করলেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন অন্য এক মহিলার সঙ্গে একটি বারে বসেছিল সে। প্রেমিককে অন্য মহিলার সঙ্গে দেখা মাত্রই তিনি রেগে যান এবং সেই বারে কথা কাটাকাটি চলতে থাকে, যা এক সময় খুবই সিরিয়াস হয়ে যায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বার থেকে দুজনকেই বেরিয়ে যেতে বলা হয়। তারপর তিনি প্রেমিককে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দেন এবং তার উপরে গাড়িটা চালিয়েও দেন।
এয়ারট্যাগের এহেন ভয়ঙ্কর দিক সাধারণ মানুষকে যেমন চিন্তায় ফেলে দিয়েছে, তেমনই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন অ্যাপলও। এই পণ্যটি লঞ্চ করার ব্যাপারে অ্যাপলের মূল উদ্দেশ্য ছিল, চাবি, ব্যাগ বা এয়ারপডের মতো জরুরি জিনিস হারিয়ে গেলে সেটিকে ট্র্যাক করে খুঁজে বের করা। কিন্তু হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে বের করার ছোট্ট যন্ত্র যখন ভয়ঙ্কর কাজে লাগে, তখন তা নিয়ে উদ্বেগ তো স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হয়। এই ঘটনাই যেন আর একবার প্রমাণ করে দিল যে, শুধু যন্ত্র নয় মানুষের গতিবিধি ট্র্যাক করতেও যথেষ্ট হারে কাজে লাগানো হচ্ছে অ্যাপল এয়ারট্যাগকে।
তবে এই প্রথম অ্যাপল এয়ারট্যাগ নিয়ে এমন সিরিয়াস ইস্যু সামনে এল তা নয়। এই কারণেই কিছুটা বাধ্য হয়ে এয়ারট্যাগের জন্য আইওএস-এর মাধ্যমে অ্যান্টি-ট্র্যাকিং ফিচার নিয়ে আসে অ্যাপল, যাতে আইফোন ব্যবহারকারীরা তার দুর্ব্যবহার না করতে পারেন। কিন্তু সেই ব্যবস্থাগুলি কার্যকর না হওয়ায়, অ্যাপলকে বিষয়টি ঠিক করার জন্য বাহ্যিক শক্তির উপর নির্ভর করতে বাধ্য করা যেতে পারে। এমনকী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি এমন প্রবিধান আনতে পারে যা এই ধরনের ঘটনাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে অ্যাপলকে সাহায্য করবে।