Dangerous Mosquitoes: বাড়িতে মশার উৎপাত নেই এমন বোধয় খুব কমই শোনা যায়। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও এনসেফালাইটিসের মতো মারণ রোগ ছড়াতে শুরু করে। আর তা থেকে আরও বেশি আতঙ্কিত হয় মানুষ। এই রোগগুলি এড়াতে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে শুরু করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন কোন মশা (Mosquitoes) আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক? বিজ্ঞানীদের গবেষণার উঠে এসেছে এক ভয়াবহ তথ্য়। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মশাদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে বিজ্ঞানীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীতে 2500 টিরও বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে। মশার গড় জীবনচক্র 3 মাস। পুরুষ মশা মাত্র 10 দিন বাঁচে। বিশেষ ব্যাপার হল, স্ত্রী মশা মারা যাওয়ার আগে 500টি ডিম পাড়তে পারে। চিনের সিচুয়ান প্রদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মশার সন্ধান পাওয়া গেছে। এই মশা দেখতে এতটাই বড় যে এর ডানার বিস্তার 11 সেন্টিমিটার পর্যন্ত। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এটি “হলোরুসিয়া মিকাডো (Holorussia Mikado)” প্রজাতির বিশ্বের বৃহত্তম মশা। এই মশাটি খুবই বিষাক্ত। এর কামড়ের 20 সেকেন্ডের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মশার তালিকায় কাদের নাম রেখেছেন বিজ্ঞানীরা।
এডিস ইজিপ্টাই (Aedes aegypti):
বিজ্ঞানীরা তালিকার প্রথমেই যে মশাটিকে রেখেছেন তা হল-এডিস ইজিপ্টাই। এই মশা জিকা, হলুদ জ্বর এবং ডেঙ্গুর মতো রোগ ছড়ায়। এই মশার প্রথম জন্ম আফ্রিকায়। বর্তমানে এই প্রজাতির মশা পৃথিবীর সব গরম দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। এই মশা দিনের বেলায় সব চেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। গবেষণা অনুসারে, মশা দিনের সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে সূর্যোদয়ের প্রায় 2 ঘন্টা পরে এবং সূর্যাস্তের কয়েক ঘন্টা আগে।
এডিস অ্যালবোপিকটাস (Aedes Albopictus):
দ্বিতীয় মশাটি হল-এডিস অ্যালবোপিকটাস। এদের প্রথম জন্ম হয় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়। কিন্তু এখন পৃথিবীর সব গরম দেশেই পাওয়া যায়। এডিস অ্যালবোপিকটাস মশা গাছের কোটর বা গর্ত, কলা ও মানকচু জাতীয় গাছের কাণ্ডের মাঝে জমানো জলে বা বাঁশের গোড়ার অংশের গর্তে ডিম পেড়ে থাকে। এই মশা কামড়ালে মানুষ ভয়ঙ্কর রোগে আক্রান্ত হয়।
অ্যানোফিলিস গাম্বিয়া (Anopheles Gambiae):
একে আফ্রিকান ম্যালেরিয়া মশাও বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রজাতির মশা রোগ ছড়াতে সবচেয়ে বেশি পারদর্শী। এই মশা ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়াসিস এবং এনসেফালাইটিস ছড়ায়। তাদের গড়ে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এই মশা প্রায়ই বাড়িতে পাওয়া যায়।
কিউলেক্স মশা (Culex Mosquitoes):
বিজ্ঞানীদের গবেষণার উঠে এসেছে, বাড়িতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কিউলেক্স মশা। তাদের জীবনচক্র গড়ে 15 দিন। তারা উড়তে খুব একটা পারদর্শী নয়। এগুলি ফাইলেরিয়াসিস এবং এনসেফালাইটিসের মতো রোগ ছড়ায়। মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই মশার দ্বারা আক্রান্ত হয়। এরা জিকা ভাইরাসের জীবাণু ছড়ায়। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর শরীরে হালকা জ্বর ও ফোস্কা পড়ে যায়। শুধু তাই নয়, জিকা ভাইরাস গর্ভে থাকা শিশুরও ক্ষতি করে। এটি মাইক্রোসেফালি নামক একটি রোগের সাথে সম্পর্কিত। এই রোগের কারণে শিশুরা ছোট মাথা নিয়ে জন্মায়।