Latest science News: বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত (Food Security In The World) একটি নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন যে, শ্যাওলা বা সামুদ্রিক শৈবাল (Algae) আগামী দিনে পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাদ্য হয়ে উঠতে পারে। এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন কীভাবে শৈবাল ভবিষ্যতে মানুষের শরীরে প্রোটিনের যোগান দেবে। বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তার সমস্যা একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি শুধু জলবায়ুর ওপরই প্রভাব ফেলছে না বরং কৃষি উৎপাদনের উপরও প্রভাব ফেলছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, খাদ্য হিসেবে সামুদ্রিক শৈবালের ব্যবহার ডায়াবেটিস ও গলগণ্ডের মতো রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বাদামী ও লাল বর্ণের সামুদ্রিক শৈবালে থাকে ক্যারোটিন নামক পদার্থ যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। সামুদ্রিক শৈবালে বিদ্যমান ক্যারাজিনান মানবদেহের উচ্চরক্ত চাপ কমাতে সহায়তা করে। স্পিরুলিনা নামক সামুদ্রিক শৈবাল দেহের হজম শক্তি বৃদ্ধি, রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শৈবাল চাষে খরচ কম কিন্তু আয় অনেক বেশি, যা বিপুলসংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। দেশের প্রচুর মানুষ মৎস্য আহরণ ও মৎস্য সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এদের বিকল্প আয়ের একটি বড় উৎস হতে পারে সামুদ্রিক শৈবাল চাষ। এদেশে শৈবালের জাত এতটাই সহজলভ্য যে, শুধু চাষের জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন। প্রয়োজন খাবার হিসেবে এটিকে জনপ্রিয় করা।
ইউসিএসজেডি-র জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং গবেষণার সহ-লেখক স্টিফেন মেফিল্ড বলেছেন যে, “শিশুদের যদি শুরু থেকেই সামুদ্রিক শৈবাল খাওয়ানোর অভ্যাস করানো যায় তাহলে তারা সুষম ও পরিপূর্ণ শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধির অধিকারী হয়ে ওঠে। শৈবালের পুষ্টি উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে—প্রোটিন, ভিটামিন, লৌহ, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ভিটামিন B1, B2, B3, B6, ভিটামিন K এবং ভিটামিন D। বয়স্ক ও ডায়াবেটিসের রোগীদের আদর্শ খাবার এই সামুদ্রিক শৈবাল।
মেফিল্ড বলেছেন যে শ্যাওলা বা শৈবালের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, সয়াবিনের তুলনায় শৈবালে 10 গুণ বা এমনকি 20 গুণ বা তারও বেশি প্রোটিন রয়েছে। একমাত্র সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত লবণেই আয়োডিন পাওয়া যায়। তাই সমুদ্রের শৈবালেও রয়েছে পর্যাপ্ত আয়োডিন। খাদ্য হিসেবে শৈবালের ব্যবহার ডায়াবেটিস রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বাদামী ও লাল বর্ণের শৈবালে থাকে ক্যারোটিন নামক পদার্থ যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। শৈবালে বিদ্যমান ক্যারাজিনান মানবদেহের উচ্চরক্ত চাপ কমাতে সহায়তা করে। মেফিল্ডের মতে, বর্তমান কৃষি পদ্ধতিগুলি বিশ্বে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন এবং পরিবেশ দূষণের একটি প্রধান উৎস। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সান দিয়েগো বলেছেন যে, জলজ পরিবেশে পাওয়া হাজার হাজার শৈবাল প্রজাতি এবং অন্যান্য সায়ানোব্যাকটেরিয়া-সদৃশ সালোকসংশ্লেষী জীব রয়েছে। যাকে মাইক্রোঅ্যালগি বলা হয়। একটি নতুন ধরনের পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাদ্য হয়ে উঠতে পারে।