What Is Artificial Leaf: বায়ুতে কার্বন নিঃসরণ রোধের জন্য বিজ্ঞানীরা একের পর এক পথ বেছে নিচ্ছেন। আর সেই সঙ্গে উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। কার্বন নিঃসরণ কমানো না গেলে যে, আগত দিনগুলিতে পৃথিবীর অবস্থা কী রূপ ধারণ করতে পারে, তা আর বলার অপেক্ষা থাকে না। কার্বন নিঃসরণ রোধে বাজারে বৈদ্যুতিক যানবাহন আনা হচ্ছে। এমনকি মানুষের মধ্যে ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদাও বেড়েছে। ফলে আসা করা যাচ্ছে কয়েক বছরের মধ্যেই যানবাহন থেকে যে কার্বন নিঃসরণ হয়, তা কমানো যাবে। শীঘ্রই যানবাহনগুলি এমন একটি জ্বালানিতে চলবে যা, কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং জল থেকে তৈরি। শুনে অবাক হলেন তো? ভাবছেন এমন আবার হয় নাকি? আদতে এমনটাই হতে চলেছে। বিজ্ঞানীরা এমন সৌরবিদ্যুতের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা এটাকে সম্ভব করবে। CO2 এবং জলের সাহায্যে তরল জ্বালানি প্রস্তুত করা হবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই নতুন প্রযুক্তি ভবিষ্যতে পরিবেশ ঠিক রাখতে বিরাট ভুমিকা পালন করবে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় এই দাবি করেছেন। এই প্রযুক্তিতে সহজেই যানবাহনে সেই তরল ব্যবহার করা যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রযুক্তি যদি বাজারে আসে, তাহলে অনায়াসে তা ইলেকট্রিক যানকে পেছনে ফেলে দিতে পারে। প্রযুক্তিটি কী এবং এটি কীভাবে কাজ করবে তা জেনে নেওয়া যাক।
কী এই নতুন প্রযুক্তি?
এই প্রযুক্তির জন্য গবেষকরা একটি কৃত্রিম পাতা (Artificial Leaf) তৈরি করেছেন। এটি সূর্যালোক ব্যবহার করে জল এবং কার্বন ডাই অক্সাইডকে ইথানল এবং প্রোপানলে রূপান্তর করেছেন। এটি এমন একটি জ্বালানী, যা স্বাভাবিক জ্বালানির তুলনায় খুব কম কার্বন নির্গত করে।
কৃত্রিম পাতাটি নিজস্ব শক্তি উৎপন্ন করে। বিজ্ঞানীরা ল্যাবে পরীক্ষার সময় সূর্যের আলোতে নিয়ে যাওয়ার আগে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জলে পাতা ডুবিয়েছিলেন। এর পরে এটি সূর্যের আলোতে নেওয়া হয়েছিল। এখান থেকে প্রতিক্রিয়ার পর তৈরি করা হয়েছিল এই জ্বালানি। এটি এমন একটি জ্বালানী, যা কম কার্বন নির্গত করে। অর্থাৎ এটি পরিবেশের জন্যও উপকারী প্রমাণিত হতে চলেছে। এমনকি বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধ করতেও সক্ষম হবে। বিজ্ঞানীদের দাবি, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি তখনই ব্যবহার করা যাবে যখন গাড়িটি সরাসরি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসবে। কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জল থেকে তৈরি বাষ্প দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে জ্বালানি তৈরি করা হবে।
কৃত্রিম পাতাটি (Artificial Leaf) কী দিয়ে তৈরি?
নেচার এনার্জি জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষক ডঃ মতিয়ার রহমান বলেছেন যে, “আমরা এমন একটি কৃত্রিম পাতার যন্ত্র তৈরি করেছি যা CO2 এবং জলের সূর্যালোক ব্যবহার করে মাল্টিকার্বন অ্যালকোহল তৈরি করে।” কৃত্রিম পাতাটিতে ধাতুর একাধিক স্তর রয়েছে। যেমন- কপার, গ্লাস, সিলভার এবং গ্রাফাইট। এটা ঠিক গাছের পাতার মত কাজ করে। কৃত্রিম পাতায় এমন জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে, যা আলো শোষণের কাজ করে। ঠিক যেমন পাতায় উপস্থিত অণুগুলি সূর্যালোক ব্যবহার করে। তেমনভাবেই এটিও সূর্যালোককে ব্যবহার করতে সক্ষম। গবেষকরা বলছেন, “এখনও পর্যন্ত ল্যাব লেভেলেই এই কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে। শীঘ্রই এটি পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়া হবে।”