আপনার কণ্ঠস্বর যদি মহাকাশের অন্যান্য গ্রহে শোনা যায়, তাহলে তা কেমন লাগবে ভেবে দেখেছেন কখনও? নাসা এবার এমনই একটি প্রোগ্রাম ডেভেলপ করেছে, যার দ্বারা মঙ্গল গ্রহে আপনার কণ্ঠস্বর কেমন শুনিয়েছে, তা পৃথিবীতে বসে আপনি জানতে পারবেন। সেই ডেটা সংগ্রহ করবে নাসার পারসিভারেন্স রোভার, যা মঙ্গলে আপনার শব্দের রেপ্লিকেট করবে। পাশাপাশি স্পেস এজেন্সিটির কাছে রয়েছে একটি অনলাইন টুল, যার মাধ্যমে মানুষ নিজের বাড়িতে বসেই মঙ্গল গ্রহে তাঁদের শব্দের অনুকরণও করতে পারবেন। তার জন্য আপনাকে নাসার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে সাউন্ড অফ মার্স সেকশন থেকে ‘ইউ অন মার্স’ ট্যাবটি নেভিগেট করতে হবে। তারপর ক্লিক করে কিছুক্ষণ হোল্ড করার পর আপনার ভয়েসটি রেকর্ড করতে পারবেন। কাজটা সঠিক ভাবে করতে পারলেই অডিও ফাইলটি ডাউনলোড করুন এবং মঙ্গলে আপনার শব্দ কীরকম শোনাল, তা শুনে দেখুন।
নাসার তরফ থেকে এই বিষয়ে লেখা হচ্ছে, “আপনি যদি মঙ্গল গ্রহে দাঁড়িয়ে থাকেন, তাহলে খুবই শান্ত, পৃথিবীতে আপনার নিজের যে শব্দ শোনেন, তারই একটু চাপা ভার্সন শুনতে পারবেন। এবং সেই শব্দ শোনার জন্য আপনাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষাও করতে হবে।” বাঁশি, বেল এবং পাখির গান, ইত্যাদি শব্দ পৃথিবীতে রেকর্ড করে তা মঙ্গল গ্রহে শোনা যায় কি না, তার পরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষকরা। কিন্তু এগুলির বেশির ভাগ শব্দই শোনা যায়নি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীতে শব্দ কীভাবে কাদ করে? নাসার তরফে বলা হচ্ছে, আমরা যা শুনি তা আসলে আমাদেরই কানের পর্দার ভাইব্রেশন বা কম্পন মাত্র। কোথা থেকে সৃষ্টি হয় এই ভাইব্রেশনের? পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায়, যখন কোনও পদার্থে কম্পন সৃষ্টি হল, তখন তার মধ্যে থাকা কণাগুলি আন্দোলিত হয়। এই আন্দোলনই একটি মাধ্যমে হতে পারে তা বায়ুমাধ্যম, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হয় বলেই শব্দ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে।
এখন পৃথিবীর সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে মঙ্গলে রয়েছে ভিন্ন তাপমাত্রা, ঘনত্ব এবং তার রসায়নও পৃথিবীর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এই ভিন্নতা শব্দকে তিনটি ভাবে প্রভাবিত করে। প্রথমত, মঙ্গলে আমাদের শব্দই আমাদের কানে পৌঁছতে একটু বেশি সময় নিয়ে নেয়। দ্বিতীয়ত, পৃথিবীর তুলনায় এই শব্দের মাত্রাও অনেকটা কম হয় এবং তৃতীয়ত, কিছ ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগন্যাল ক্রমাগত দুর্বল হয়ে যাওয়া।