মহাকাশের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ব্ল্যাক হোলটি (Black Hole) আবিষ্কার করে ফেললেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সেই নতুন ব্ল্যাক হোলটি এত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে যে, প্রতি সেকেন্ডে সেটি একটা পৃথিবী গ্রাস করার সমান। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-র (Australian National University) জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরটি আবিষ্কার করেছেন। মহাকাশবিজ্ঞানীরা এটিকে “খড়ের গাদায় খুব বড় এবং অপ্রত্যাশিত সুচ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই ব্ল্যাক হোলকে একটি মহাকাশীয় বস্তু (Celestial Object) হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা আমাদের নিজস্ব গ্যালাক্সি থেকে আসা সমস্ত আলোর চেয়ে 7,000 গুণ বেশি উজ্জ্বল করে। পাশাপাশি এটি সারা বিশ্বের অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে দৃশ্যমানও বটে।
স্কাইম্যাপার সাউদার্ন সার্ভে (এসএমএসএস) থেকে সিম্বিওটিক বাইনারি নক্ষত্রের অনুসন্ধানের সময় ব্ল্যাক হোলটি অপটিক্যাল রঙের দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল এবং ফলাফলগুলি তখন থেকে আরএক্সিভ ডেটাবেসে প্রকাশিত হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির প্রকাশনায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে গবেষণাটি।
এএনইউ-র প্রধান গবেষক ডক্টর ক্রিস্টোফার ওঙ্কেন একটি বিবৃতিতে দাবি করেছেন, “জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা 50 বছরেরও বেশি সময় ধরে এই জাতীয় বস্তুর সন্ধান করছেন। তাঁরা হাজার হাজার বস্তু খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু এই আশ্চর্যজনক ভাবে উজ্জ্বল বস্তুটি তাঁদের নজরে আসেনি।”
অনুমান করা হচ্ছে যে, বিশাল ব্ল্যাক হোল দুটি বড় গ্যালাক্সির একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয়েছে। উচ্চ মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্র-সহ নক্ষত্রের মৃত্যুর সময় ব্ল্যাক হোল তৈরি হয়, যার কারণে তারার ভর একটি খুব ছোট জায়গায় চাপা পড়ে যায়। পাশাপাশি মৃত তারার আলো-সহ সবকিছু আটকেও দেয়। এটিই ব্ল্যাক হোলগুলিকে অদৃশ্য করে তোলে, যা তাদের চারপাশের স্বর্গীয় স্থানের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া আলো দ্বারা সনাক্ত করা যায়।
নতুন ব্ল্যাক হোলটি ঠিক কতটা বড়
এএনইউ-র পিএইচডি গবেষক স্যামুয়েল লাই-এর মতে, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি দ্বারা চিহ্নিত নতুন ব্ল্যাক হোলটির চাক্ষুষ মাত্রা 14.5। এটি আমাদের নিজস্ব ছায়াপথের ব্ল্যাক হোলের চেয়ে 500 গুণ বড়। ব্ল্যাক হোলটি এত বড় যে, আমাদের সৌরজগতের সমস্ত গ্রহের কক্ষপথগুলি ব্ল্যাক হোলের ইভেন্ট হরাইজনের ভিতরে ঢুকে যাবে। এটি আসলে একটি ব্ল্যাক হোল বরাবর সীমানা যার মধ্য দিয়ে কিছুই পালাতে পারে না।