চাঁদে নভশ্চর পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছে জাপান। সেই সঙ্গে শোনা গিয়েছে, এবার মঙ্গলেও অভিযান শুরু করবে সূর্যোদয়ের দেশ। ২০২১ সাল জুড়ে চাঁদ এবং মঙ্গলগ্রহ নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের উৎসাহের পারদ ক্রমশ চড়েছে। রাশিয়া এবং আমেরিকার পর চিন ইতিমধ্যেই মঙ্গলগ্রহে অভিযান করেছে। এবার পালা জাপানের। শোনা যাচ্ছে, ২০২৪ সালে মঙ্গল অভিযান শুরু করতে পারে জাপান। এর পাশাপাশি পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের মানব অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে এই দেশের। ২০২২ সালের শেষভাগে চাঁদে নভশ্চর পাঠাতে পারে জাপান।
এই সবের পাশাপাশি মহাকাশে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টাও চালাচ্ছে জাপান। অন্যদিকে চাঁদে জাপানের মানব অভিযান করার একটি বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। এই অভিযানের মাধ্যমে আর্টেমিস প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রথম অ-আমেরিকান অর্থাৎ মার্কিন নয়, এমন কাউকে চাঁদে অবতরণ করানো হবে। অনুমান, এই নভশ্চর নিঃসন্দেহে জাপানিই হবেন। আর্টেমিস প্রোগ্রামের লক্ষ্য হল চাঁদে সঠিক ভাবে পর্যবেক্ষণের পর সফলভাবে নভশ্চরদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা।
অন্যদিকে, ২০৩০ সালের মধ্যে মহাকাশের বিভিন্ন অভিযানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চাইছে জাপানের প্রতিবেশী দেশ চিনও। মঙ্গলগ্রহে ইতিমধ্যেই তারা রোভার পাঠিয়েছে। এবার শোনা গিয়েছে যে জাপানের মতো চিনও চাঁদে নভশ্চর পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে স্পেস ট্যুরিজম বা মহাকাশ পর্যটনের দুনিয়ায় অভিষেক হয়ে গিয়েছে জাপানের। সূর্যোদয়ের দেশের ধনকুবের ইউসাকু মায়েজাওয়া ইতিমধ্যেই মহাকাশ সফর সেরে সফল ভাবে ধরিত্রীতে ফিরেও গিয়েছেন। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের ১২ দিন ছিলেন তিনি। প্রায় এক দশক পর ইয়াসাকুই প্রথম মহাকাশ পর্যটক যিনি আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে সফর করেছে। এই সাফল্যের পরই জাপান তাদের আগামী দিনের মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনাগুলো প্রকাশ্যে এনেছে।
মঙ্গলগ্রহ নিয়ে বরাবরই উৎসাহী জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তার খোঁজ অনেকদিন ধরেই চালাচ্ছেন বৈজ্ঞানিকরা। আর এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মার্স বা মঙ্গলগ্রহে। ভবিষ্যতে লালগ্রহে মানব অভিযান অর্থাৎ নভশ্চরদের পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণের পরিকল্পনাও রয়েছে বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে। আর সেই তালিকাতেই এবার নাম জুড়েছে জাপানের।
চিনের মঙ্গল অভিযান- চাইনিজ ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (CNSA) সফল ভাবে তাদের রোভার ঝুরং পাঠিয়েছে মঙ্গলগ্রহে। এ বছর মে মাসে লালগ্রহে এই ঝুরং রোভার পাঠিয়েছে চিন। আর এর ফলেই আমেরিকা এবং রাশিয়ার পর এবার মঙ্গলের মাটিতে পা রাখা তৃতীয় দেশের খেতাব পেয়ে গিয়েছে চিন। সফলভাবে ৯০ দিনের মিশন সম্পূর্ণও করেছে রোভার ঝুরং। চিনের অগ্নিদেবতার নামে নামকরণ করা হয়েছে এই রোভারের। প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজা এবং জলের সন্ধানের পাশাপাশি রোভার ঝুরং মঙ্গলগ্রহের মাটি, পৃষ্ঠদেশের অন্যান্য উপদান নিয়েও গবেষণা করেছে। সেই সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছে মঙ্গলগ্রহে আবহাওয়া এবং বায়ুমণ্ডলও।
আরও পড়ুন- Best NASA Pics: ২০২১ সালে নাসার প্রকাশ করা মনোমুগ্ধকর ছবি, দেখে নিন একঝলকে