JWST Damage: মহাবিশ্বের অকল্পনীয় ছবি তুলে গ্রহাণুর ধাক্কায় ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জেমস ওয়েব, 8000 কোটি টাকার টেলিস্কোপ আর কাজ করবে?

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়

Jul 20, 2022 | 12:59 PM

বিশ্বের সর্ববৃহৎ, সর্বশক্তিমান সেই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপই গুচ্ছের গ্রহাণুর আক্রমণে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সম্প্রতি একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। মে মাসেই এমনতর কাণ্ড ঘটেছে বলে রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে।

JWST Damage: মহাবিশ্বের অকল্পনীয় ছবি তুলে গ্রহাণুর ধাক্কায় ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জেমস ওয়েব, 8000 কোটি টাকার টেলিস্কোপ আর কাজ করবে?
ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।

Follow Us

পৃথিবীর জন্মের আগে কেমন ছিল মহাজাগতিক দুনিয়াটা? টাইমমেশিনে 1300 কোটি বছর আগে গিয়ে একবারে প্রথম দিকের গ্যালাক্সির ছবি তুলে নিয়ে এসেছিল জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (James Webb Space Telescope)। শুধু এই গ্যালাক্সি কেন, দূরবর্তী গ্যাস প্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প থেকে শুরু করে একটি তারার অপমৃত্যুর ঠিক আগের মুহূর্তটা। মৃত্যুর ঠিক কিছুক্ষণ আগে কীভাবে সেই তারা নাচ দেখিয়েছিল, সে ছবিও কয়েকশো কোটি বছর পরে মানবজগতের সামনে নিয়ে এসেছিল ওয়েব নামক একটি শক্তিশালী টেলিস্কোপটি। জেমস ওয়েব স্পেস এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী টেলিস্কোপ, হাবলের থেকেও কয়েক গুণ বেশি শক্তিশালী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ, সর্বশক্তিমান সেই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপই গুচ্ছের গ্রহাণুর আক্রমণে (Asteroid Attack) ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সম্প্রতি একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। মে মাসেই এমনতর কাণ্ড ঘটেছে বলে রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি পেপারে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, জেমস ওয়েব তার কার্যক্ষমতার রূপরেখা দেওয়ার পরে একটি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, যা সংশোধন করা এক প্রকার অসম্ভব। তাঁরা আরও যোগ করে বলছেন, “টেলিস্কোপটি সর্বত্রই একটি ছোট প্রভাবের সম্মুখীন হয়েছে, যা এখনও পরিমাপযোগ্য নয়।”প্রতিবেদনটিতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, “বর্তমানে অনিশ্চয়তার সবথেকে বড় উৎস মাইক্রোমেটিওরয়েড প্রভাবের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব, যা ওয়েবের প্রাথমিক আয়নাকে ধীরে ধীরে অবনমিত করে।”

গত 22 মে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটির প্রাথমিক আয়নায় সজোরে ধাক্কা দেয় ছয়টি মাইক্রোমেটেওরাইট। এই ছয়টিই ওয়েবের আয়নায় সবথেকে ক্ষতিকর প্রভাবটি ফেলেছে। প্রাথমিক ভাবে এই ক্ষতিকে খুব বিরাট কিছু একটা বলে মনে করা হয়নি। কিন্তু এখন এই বিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হচ্ছে, এই প্রভাব যথেষ্ট গুরুতর। যদিও ক্ষয়ক্ষতি স্পেস টেলিস্কোপের প্রাথমিক আয়নার রেজোলিউশনের সঙ্গে কোনও দিক থেকে আপস করেনি। যে সব ইঞ্জিনিয়াররা ওয়েব ডিজাইন করেছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন যে আয়না এবং সানশিল্ড মাইক্রোমেটিওরয়েডের প্রভাব থেকে ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে, এই প্রতিবেদনেই এমনটা বলা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হচ্ছে, পরিসংখ্যানগতভাবে উচ্চতর মাইক্রোমেটিওরয়েড হার এবং শক্তি রয়েছে এমন অরবিটাল গতির দিকে তাকিয়ে ব্যয় করা সময়কে হ্রাস করার বিষয়টি একটি সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে। জুন মাসে গ্রহাণু আক্রমণের পর নাসা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলে যে ওয়েবের আয়না “অত্যন্ত বেগে উড়ে যাওয়া ধূলিকণা, সূর্য-পৃথিবী L2-এর চারপাশে তার কক্ষপথে মাইক্রোমেটিওরয়েড থেকে বোমাবর্ষণ প্রতিরোধ করার জন্য প্রকৌশলী”।

নাসার তরফ থেকে বলা হচ্ছে, টেলিস্কোপটি তৈরি করার সময় ইঞ্জিনিয়াররা কক্ষপথে অপারেশনের জন্য অবজ়ারভেটারিকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, সে সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পেতে আয়নার নমুনাগুলিতে সিমুলেশন এবং প্রকৃত পরীক্ষার প্রভাবগুলির মিশ্রণ ব্যবহার করেছিলেন। এই সাম্প্রতিক ক্ষতিকারক প্রভাবটি মডেলের চেয়ে অনেকটাই বড় ছিল এবং ইঞ্জিনিয়ার দলটি মাটিতে যা পরীক্ষা করেছিল তারও বাইরে।

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ তৈরি করেছে নাসা, যার জন্য খরত হয়েছে 10 বিলিয়ন মার্কিন ডলার। 2021 সালের 25 ডিসেম্বর লঞ্চ হওয়া জেমস ওয়েব স্পেস মহাকাশ টেলিস্কোপের বৃহত্তম আয়নাগুলির মধ্যে একটির সমন্বয়ে গঠিত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে L2 বিন্দুকে প্রদক্ষিণ করছে ওয়েব, যা পৃথিবী থেকে প্রায় এক মিলিয়ন মাইল বা 1.6 মিলিয়ন কিলোমিটার।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ বহু অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছে। টাইমমেশিনে এত বিরাট সময় ভ্রমণ করে সময়েরও আগে গিয়ে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কীরকম ছিল, গ্রহ-নক্ষত্রদের সৃষ্টি কীভাবে হয়েছিল, তা খুঁজে বের করা একমাত্র জেমস ওয়েবের পক্ষেই সম্ভব হয়েছে। তবে আরও অনেক কিছু অন্বেষণ করা বাকিও ছিল জেমস ওয়েবের। স্বাভাবিক ভাবেই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার রিপোর্ট প্রকাশ হতে মহাকাশবিজ্ঞানীদের মনে বিরাট চিন্তা। কারণ, আরও অপ্রত্যাশিত কিছুর অন্বেষণ করার প্রত্যাশা একমাত্র জেমস ওয়েবের কাছেই ছিল।

Next Article