Trapdoor Spider Or Euoplos dignitas: মাকড়সাকে অনেকেই ভয় পান। আবার তা যদি এমন ‘দৈত্যাকার’ হয়, তাহলে তো কথাই নেই। পৃথিবীতে মাকড়সার প্রজাতির শেষ নেই। মাকড়সা হল এমন একটি প্রাণী যার হাজার হাজার প্রজাতি রয়েছে। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীতে মাকড়সার কমপক্ষে 50 হাজার প্রজাতি রয়েছে, যাদের বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন। তার মধ্যে এমন অনেক প্রজাতি রয়েছে, যেগুলির একটা কামড় নিমেষে প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। অনেক রকম মাকড়শা হয়, কেউ জাল বোনে, কেউ লাফিয়ে শিকার ধরে। সব মাকড়শার একজোড়া বিষগ্রন্থি আছে। এদের অনেকের কামড় খুব বিষাক্ত। তবে সবাই প্রাণঘাতী নয়। বিজ্ঞানীরাও পৃথিবীতে বসবাসকারী মাকড়সাদের বিভিন্ন প্রজাতি নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন নিরন্তর। কিন্তু আজও এমন অনেক প্রাণীর দেখা মেলে, যাদের অস্তিত্ব এবং ঠিকানা বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো পান। সম্প্রতি, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড মিউজিয়ামের বিজ্ঞানীরা মাকড়সার একটি নতুন প্রজাতির সন্ধান পেয়েছেন, যার দেখা আগে কখনও পাওয়া যায়নি। এই মাকড়সার নাম ট্র্যাপডোর স্পাইডার (Trapdoor Spider বা Euoplos dignitas)। ব্রিসবেনে এই মাকড়সার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই নতুন প্রজাতির মাকড়সার পায়ের দৈর্ঘ্য ছাড়াই এর আকার 5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মধ্য কুইন্সল্যান্ড অঞ্চলের কালো মাটির ভিতরে এই মাকড়সা বসবাস করে। যেকোনও ফাঁকা জঙ্গলের মাটির ভিতরে এরা বাসা বাঁধে।
কুইন্সল্যান্ড মিউজিয়াম (Queensland Museum) ফেসবুকে এই মাকড়সার সম্পর্কে শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানীরা সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ডের ব্রিগালো বেল্ট থেকে একটি নতুন প্রজাতির মাকড়সার সন্ধান পেয়েছেন।’ তার শেয়ার করা দু’টি ছবিতে একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী মাকড়সা দেখা যাচ্ছে। এই প্রজাতির নামটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ডিগনিটাস থেকে। এই মাকড়সার আকার অনেক বড় এবং বিজ্ঞানীদের মতে, এর বিষও রয়েছে।
এই আবিষ্কার সম্পর্কে কুইন্সল্যান্ড মিউজিয়ামের প্রধান গবেষক ডঃ মাইকেল রিক্স জানাচ্ছেন, এই প্রজাতির স্ত্রী মাকড়সা তাদের জীবন মাটির নীচে কাটিয়ে দেয়, আর পুরুষরা পাঁচ থেকে সাত বছর পর অন্য গর্তে সঙ্গী খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। আর আগের গর্ত ছেড়ে দেয়। এই মাকড়সারা যে গর্তের নীচে বাস করে, দিনের বেলায় তা বন্ধ থাকে। কিন্তু রাতের বেলা, মাকড়সারা গর্তের ঠিক নীচে বসে থাকে, পোকামাকড় যাওয়ার অপেক্ষা করে। যাতে তারা সেগুলির শিকার করতে পারে। মাকড়সাগুলি শিকারকে দমন করার জন্য তাদের বিষ ব্যবহার করে। কিন্তু চিন্তার কোনও বিষয় নেই। তারা জানাচ্ছেন, এই প্রজাতির মাকড়শাগুলি মানুষের জন্য বিপজ্জনক নয়।
এই জাতীয় মাকড়সা বিলুপ্তির পথে কেন?
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই প্রজাতির মাকড়সা শুধুমাত্র সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ডের ইডসওল্ড এবং মন্টোতে পাওয়া যায়। এদের বেশিরভাগ আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কখনও ভূমিক্ষয়ের কারণে, আবার কখনও জঙ্গলে দাবানলের কারণে। আর এই কারণেই দিনের পর দিন এই মাকড়সা বিলুপ্তির পথে চলে গিয়েছে।