পৃথিবী ছাড়াও সৌরজগতে ছড়িয়ে রয়েছে আরও অনেক। সবার এখনও হদিশ মেলেনি। যাদের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, বিজ্ঞানীরা তাদের নামকরণ করেছেন বটে। কিন্তু তাদের পৃষ্ঠদেশ কেমন ছিল আগে তা জানার জন্য নিত্যনতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
সেই প্রসঙ্গেই, সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে, উল্কাপিন্ড বা উল্কাখণ্ড পুড়িয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তার ফলে কী হবে? বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, উল্কাখণ্ড পোড়ানোর ফলে যে গ্যাসীয় উপাদান নির্গত হবে, সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিভিন্ন রুক্ষ পাথুরে গ্রহের গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আপাতত এই উল্কাখণ্ড ‘বেকিং’ করার কাজ শুরু করেছেন। এইসমস্ত উল্কাপিণ্ড বা খণ্ড বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে পৃথিবীতে এসে পড়েছিল। তাদের নমুনা সংগ্রহ করেই চলছে এই নতুন ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। প্রবল পরিমাণ তাপমাত্রায় এইসব উল্কাখণ্ড পোড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবী ছাড়াও অন্যান্য গ্রহ ঠিক কেমন, তাদের গঠন-প্রকৃতি, আবহাওয়া কেমন ধরণের, এককথায় বলতে গেলে সেই রুক্ষ পাথুরে গ্রহের অ্যাটমোস্ফিয়ার কেমন, আর কোথা থেকেই বা পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে উল্কাখণ্ড—- এইসব প্রশ্নের উত্তর অনেকদিন ধরেই খুঁজে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই সূত্রেই উল্কা পুড়িয়ে এই নতুন গবেষণা শুরু হয়েছে। কারণ পোড়ানোর পর উল্কাখণ্ড থেকে নির্গত গ্যাস পরীক্ষা করলে নতুন অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
আপাতত তিন ধরণের উল্কাখণ্ডের গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এগুলি CM-type carbonaceous chondrites। যে ধরণের উল্কাখণ্ডের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে সেগুলি হল Murchison, Jbilet Winselwan এবং Aguas Zarcas। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই উল্কাখণ্ডগুলি যে ধরণের উপাদান দিয়ে গঠিত, সেই উপাদানের ধরণের অন্য উপাদান সূর্য এবং অন্যান্য গ্রহের ক্ষেত্রে পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন- অবশেষে উড়ল মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity, সফল হয়েছে প্রথম উড়ান, জানিয়েছে নাসা
জানা গিয়েছে, Murchison chondrite ১৯৬৯ সালে অস্ট্রেলিয়াতে পড়েছিল। Jbilet Winselwan- এই উল্কার পতন হয়েছে ২০১৩ সালে পশ্চিম সাহারা মরুভূমিতে। আর ২০১৯ সালে কোস্টা রিকাতে পড়েছিল Aguas Zarcas। জানা গিয়েছে, UCSC — র তিনটি বিভাগ Astronomy and Astrophysics, Earth and Planetary Sciences, Physics —এই তিন বিভাগের গবেষক-বিজ্ঞানীরা এই উল্কাখণ্ডগুলির পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।