আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল সম্প্রতি এক নতুন ধরনের শিলা খুঁজে পেয়েছেন প্রশান্ত মহাসাগরে। জানা গিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরে খনন কার্য চালাচ্ছিলেন ওই গবেষকদের দল। সেই সময়েই এই ব্যাসল্ট শিলার সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। গবেষকরা জানিয়েছেন, বহমান লাভা ঠাণ্ডা হয়ে জমাটবদ্ধ হয়ে এই শিলা তৈরি হয়েছে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে লাভার গতি এবং ঠাণ্ডা হওয়ার গতিপ্রকৃতি, দুটোই ছিল বেশ বেশি। আর লাভার মধ্যে ছিল আয়রন অর্থাৎ লোহা এবং ম্যাগনেসিয়াম।
অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, জাপান, জার্মানি, ব্রিটেন, সুইৎজারল্যান্ড এবং চিন— এইসব দেশের গবেষকরা একত্রিত হয়ে একটি দল গঠন করেছিলেন। তাঁরাই শুরু করেছিলেন এই খনন এবং সন্ধান অভিযান। ওশান ফ্লোর অর্থাৎ সমুদ্রের অন্তরে প্রায় ৬ কিলোমিটার ড্রিল করে খোঁড়ার পর জাপান সাগরের আমামি সানকাকু বেসিনে এই শিলা বা প্রস্তরের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। জাপানের মাউন্ট ফুজি আগ্নেয়গিরি থেকে এক হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই বেসিন।
জানা গিয়েছে, ওই ৬ কিলোমিটার খোঁড়ার পর সমুদ্রের তলায় আরও দেড় কিলোমিটার খুঁড়েছিলেন গবেষকরা। সেখান থেকে এমন কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে যা এর আগে কখনও বিজ্ঞানীরা দেখেননি। আপাতত সেইসব নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন গবেষকরা। যে অংশ থেকে এই ব্যাসল্ট শিলা এবং অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই জায়গাটি আসলে প্রশান্তমহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা বা আগ্নেয় বলয় কিংবা ‘রিং অফ ফায়ার’- এর অন্তর্গত। প্রশান্তমহাসাগরের অভ্যন্তরে একটি নিমজ্জিত অংশ এই ‘রিং অফ ফায়ার’। সেই নিমজ্জিত অংশ বাস্তবে ভীষণ ভাবে টেকটনিক্যালি অ্যাক্টিভ জোন।
অর্থাৎ এই অংশ ভীষণ ভাবে ভূমিকম্প এবং অগ্ন্যুৎপাত প্রবণ। সারাবছরই এখানে লাভার উদগীরণ বা কম্পন অনুভূত হয়। আর যেসব জায়গা থেকে এইসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপর্যয় অনুভূত হয়, সেটি একদম গোলাকারে চারদিক জুড়ে অবস্থিত। ওই গবেষকদের দল জানিয়েছেন, ৫০ মিলিয়ন বছর আগে এই অঞ্চলে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ এবং লাভা উদগীরণের ফলে যে ব্যাসল্ট শিলা তৈরি হয়েছে, তেমনই কিছু খুঁজছিলেন তাঁরা। সেই সূত্রেই চলছিল খনন কার্য। আর তার জেরেই এই শিলা খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা।