‘ভারতে ফিরছে পাবজি’—এ খবর পুরনো। গত নভেম্বর মাসে গেমার্সরা জেনে গিয়েছেন পাবজির যাবতীয় খুঁটিনাটি। কবে ফিরছে, কীভাবে ফিরছে সব। কিন্তু যে প্রশ্ন বারবার মোবাইল গেমিং নিয়ে উঠে আসছে তা হল গেমের প্রতি সাংঘাতিক এক আসক্তির কথা। বাবা-মায়েরা তটস্থ। ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল স্ক্রিনে চোখ। আর দু’হাতের চার আঙুলকে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখা। মধ্যপ্রদেশের নিমাচ এলাকার ফারকান টানা ৬ ঘণ্টা পাবজি খেলার পর মারা যায়। খাবার অবধি মুখে তোলেনি ফারকান। খেলার উত্তেজনা ধরে রাখতে পারেনি দ্বাদশ শ্রেণী পড়ুয়া ফারকান। হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় ফারকানের। ইন্টারনেট গেম প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল পড়ুয়ার। এসব দেখে-শুনে আরও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন অভিভাবক। মুক্তির উপায় খুঁজছেন তাঁরা।
খুব সহজ এক প্রশ্ন কী করবেন বাবা-মায়েরা? পাবজি ভাইরাসের ভ্যাক্সিন কি সত্যি তৈরি হয়েছে?
প্রশ্নটি ছিল পায়েল ঘোষের (প্যারেন্টিং কনসালটেন্ট) কাছে।
তিনি যা বললেন তা নিচের চারটি পয়েন্টে রাখা হল।
আরও পড়ুন কী দেখছে আপনার বাচ্চা, নেটফ্লিক্স জানাবে আপনাকে
১. ডিজিটাল ডিটক্সিং— প্রতিদিন বাবা-মাকে বাড়িতে বাচ্চাদের সঙ্গে বসে ‘ডিজিট্যালি ফ্রি টাইম’ কাটাতে হবে। বাবা-মায়েদের বলতে হবে, “আমরা যে ভাবে তোমার সব প্রয়োজনে থাকছি, ঠিক তেমনভাবে তোমাকেও তো আমাদের প্রয়োজনে থাকা উচিৎ। আমরা চাই যতটুকু সময় আমাকে তুমি দেবে বলে ঠিক করছো তাতে শুধু মোবাইল বা ইন্টারনেট রেখো না।“ মনে রাখতে হবে কথোপকথনে যেন কোনও আদেশ না থাকে। উল্টোটা হলে সমস্যা বাড়তে পারে।
২. এন্টারটেনমেন্টের টাইম স্লট— পাবজি চালু হলে বাচ্চারা তার প্রতি দিকে ঝুঁকবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এটা ঠিক করে ফেলতে হবে কতক্ষণ তারা সেই গেম খেলবে। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে ফেলুন। পড়াশোনার সময় বইপত্তরের দরকার পড়ে, মোবাইল নয়। সার্চ ইঞ্জিনের দরকার পড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে ডেস্কটপ, বা ল্যাপটপ ব্যবহার করতে বলুন।
৩. বাড়ির কাজও করতে হবে— দশ বছর বয়স পেরিয়ে গেলেই বাচ্চাকে বোঝাতে হবে যে তাকেও বাড়ির কিছু কাজের দায়িত্ব নিতে হবে। অন্তত তিনটে করে কাজের দায়িত্ব নিতে হবে। বাচ্চাকে একেবারে তার মতো করে বোঝাতে হবে যে এ কাজ তুমি ছাড়া কেউ করতে পারবে না।
৪. ডার্ক ওয়েব সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল— পাবজি হোক বা ফ্রি ফায়ার তাতে ডার্ক ওয়েব চলছে। যে পাবজি তে খুব মানুষ মারছে, তার এই অ্যগ্রেশন টেন্ডেন্সিও কিন্তু কোনওভাবে অবজার্ভ করা হচ্ছে। তার খেলা দেখে তাকে অনলাইনে ইনভাইট করা হচ্ছে। এক মিলিট্যান্ট গোষ্ঠির দিকে ঠেলে একটা কিলার ইনস্টিংট তৈরি করে দিচ্ছে গেমগুলো। এই পুরো বিষয়টাকে বাচ্চাদের বোঝাতে হবে।