BUDGET 2023: সরকারি হাসপাতাল নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে ক্ষোভ উগরে দিলেন ক্যানসারে আক্রান্ত জয়প্রকাশ
দেশ স্বাধীন হয়েছে ৭৫ বছর। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে আমরা সঠিক চিকিৎসা পাই না। তৃণমূল স্তরে আপনার ঘোষিত প্রকল্পগুলির কোনও অগ্রগতি নেই।
ম্যাডাম অর্থমন্ত্রী,
আমার নাম জয়প্রকাশ। আমি পঞ্জাবের লুধিয়ানায় থাকি। কোভিড চিকিৎসার সময় আমার ফুসফুসের ক্যান্সার ধরা পড়ে। এটি এখন তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে।
আমার বড় মেয়ে আমাকে দিল্লির রাজীব গান্ধী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে খরচ হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। কিন্তু আমার এই খরচ করার সামর্থ্য নেই।
আমি লুধিয়ানার একটি ইস্পাত কারখানায় ৪০ বছর ধরে কাজ করেছি। চার বছর আগে আমি অবসর নিয়েছি। আমি PF-এর মাধ্যমে ২,৫০০ টাকা মাসিক পেনশন পাই। আমার তিন মেয়ে আছে এবং তাঁরা সকলেই বিবাহিত। এখন আমি শুধু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে পারি।
আমি গত দু-দিন ধরে AIIMS-এ ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছি, কিন্তু সবই বৃথা। সেখানে খুব কম লোকই ভর্তি হতে পারে। আমরা প্রতিদিন ভোরে গাজিয়াবাদ থেকে AIIMS-এর উদ্দেশে রওনা দিই, কিন্তু এখনও আমরা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই না। হয়তো ভাগ্য আমার পক্ষে নেই। আমি একা নই, আমার মতো শত শত এরকম মানুষ রয়েছেন।
আজও আমি খুব ভোরে হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছি। আমি তিন নম্বর গেটের বাইরে বসে আছি। আমার মেয়ে শিখা এই মুহূর্তে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। শীঘ্রই বাজেট আসছে, তাই ভাবলাম আপনাকে চিঠি লিখি, বাজেটের জন্য আমার শুভেচ্ছা জানাই।
ম্যাডাম অর্থমন্ত্রী, আমি জানতে চাই সারাজীবন ধরে আমি সব কর দিয়েছি, তাহলে আমাকে এসবের বোঝা আমাকে বহন করতে হবে কেন? আমার কী দোষ? আমার বৃদ্ধ বয়সে, যখন আমার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে, তখন আমার দেওয়া করের টাকায় যে হাসপাতাল চলছে, সেখানেই আমি চিকিৎসা করতে পারছি না।
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে এত খারাপ হবে তা আমি কখনই ভাবিনি। আমরা ছোট ছোট শহরগুলোর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ করতাম। আয়ুষ্মান ভারত আমার মত মানুষের জন্য নয়। যদি হতও বা তাহলে ক্যানসারের মতো রোগে সাহায্য করত না।
ম্যাডাম অর্থমন্ত্রী, আমার পক্ষে বিশ্বাস করা কঠিন যে সরকারের এত বিশাল বাজেট সত্ত্বেও আমাদের মতো সাধারণ মানুষ ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা পাই না। আমার এখনও মনে আছে যখন আমি প্রথম শুনেছিলাম যে প্রতিটি জেলায় একটি করে সরকারি হাসপাতাল হবে, তখন আমি হাততালি দিয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু তারপরও আমার মতো রোগীদের রোগের যন্ত্রণা এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসার সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পড়তে হবে।
দেশ স্বাধীন হয়েছে ৭৫ বছর। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে আমরা সঠিক চিকিৎসা পাই না। তৃণমূল স্তরে আপনার ঘোষিত প্রকল্পগুলির কোনও অগ্রগতি নেই। ম্যাডাম আমরাও ভালো চিকিৎসা ও ওষুধ পাওয়ার যোগ্য।
আপনিই সরকার, বেসরকারি হাসপাতালের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে পারবেন না? গরিব রোগীদের সুচিকিৎসা দেওয়ার দায়িত্ব কি সরকারের নয়?
কোভিড মহামারীর কারণে আমি বিভিন্ন প্রিয়জনকে হারিয়েছি। তারা হাসপাতালে অক্সিজেন বা এমনকি বিছানা পেতেও অক্ষম ছিলেন। আমি দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। হয়তো শীঘ্রই চলে যাব।
এই চিঠি আপনার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত আমি বেঁচে থাকব কিনা জানি না।
কিন্তু অর্থমন্ত্রী ম্যাডাম, এমন সব গরিব রোগীর কথা ভাবুন যাঁরা ভালো চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে যেতে পারছেন না।
আপনার অনুগত
জয়প্রকাশ