গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন জটিলতায় মহিলাদের মৃত্যু যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে মহিলাদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২,৮৭,০০০ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। ২০১৬ সালে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩০৯,০০০। বর্তমানে সংখ্যাটা কম হলেও বিষয়টা উদ্বেগ তৈরি করছে বিশ্বজুড়ে। যদিও ২০২০ সালে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০০ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন অবস্থায়। প্রতি দু’মিনিটে একজন মহিলা মারা গিয়েছেন। ২০০০ সালে প্রতি ১ লক্ষে ৩৩৯ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যাটাই ২০২০ সালে কমে হয়েছে প্রতি ১ লক্ষে ২২৩ জন। ২০২০ সালে ভারতে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ২৪ হাজার। নাইজেরিয়ার পরই রয়েছে ভারতের স্থান। ওই বছর নাইজেরিয়ায় ৮২ হাজার মহিলা মারা গিয়েছেন সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে বা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়। ২০২০ সালে প্রসবকালীন জটিলতায় যে সব মহিলার মৃত্যু হয়েছে, তার ৭০ শতাংশ সাহারা সংলগ্ন আফ্রিকায়, যা অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের তুলনায় ১৩৬ গুণ বেশি। ২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ভারতে প্রসূতি মৃত্যুর ৭৩.৫ শতাংশ কমেছে। বিশ্বের প্রত্যেক মহিলা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যাতে যথোপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা পান, তার উপরই জোর দিচ্ছেন হু-র প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। প্রজনন সংক্রান্ত যাবতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া অধিকার প্রত্যেক মহিলার। এই কথায় আশ্বাস মিললেও রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিসংখ্যানকে হালকাভাবে নেওয়া যায় না। মূলত গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভপাত সংক্রান্ত জটিলতা, এইচআইভি-এইডসের মতো সংক্রমণ প্রসূতি মৃত্যুর জন্য দায়ী। কিন্তু এই প্রত্যেকটি স্বাস্থ্য অবস্থাই চিকিৎসাযোগ্য। যদিও ২৭০ মিলিয়ন মহিলা কোনও রকম পরিকল্পনা ছাড়াই গর্ভবতী হন, যা তাঁদের মৃত্যুর মুখে ঢেলে দেয়। আর প্রান্তিক অঞ্চলে আয়, শিক্ষার মতো বিষয়গুলোও প্রসূতি মৃত্যুর জন্য দায়ী।