Kurmi Protest: কুড়মি কারা? কেন তাদের আন্দোলন?

Kurmi Protest: কুড়মি কারা? কেন তাদের আন্দোলন?

TV9 Bangla Digital

| Edited By: Moumita Das

Updated on: May 10, 2023 | 6:46 PM

কুড়মিদের নিজস্ব ধর্মাচরনের রেওয়াজ রয়েছে। আদি অনন্ত কাল ধরে তাঁরা প্রকৃতির উপাসক। পাহাড়, গাছ, মাটি,জল তাঁদের উপাস্য দেবতা। প্রতিটি গ্রামে একটি প্রাচীন গাছকে কেন্দ্র করে থাকা নিজস্ব গরাম থানে বছরের নির্দিষ্ট দিনে প্রকৃতির পুজো করেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। সামাজিক রীতিনীতি থেকে জীবনযাত্রা, ধর্মাচরণ থেকে সংস্কৃতি সব কিছুতেই প্রাচীনতার ছাপ স্পষ্ট। কুড়মিদের নিজস্ব কুড়মালি ভাষা রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব নাচ ও গানের আঙ্গিক

আদিবাসী তকমার দাবিতে বছরের পর বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষেরা। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে নিজেদের আদিবাসী হিসাবে দাবী করছেন কুড়মিরা? কারা এই কুড়মি সম্প্রদায়?

কুড়মিদের দাবি তাঁরা বহিরাগত নয়। শতকের পর শতক ধরে ছোটনাগপুর মালভূমির উচুঁ নিচু পাহাড়ি জল জঙ্গলেই তাঁদের বসবাস। মূলত ঝাড়খন্ড, বিহার, ওড়িশা ও এ রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। এ রাজ্যের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার জনসংখ্যার একটা বড় অংশ কুড়মি সম্প্রদায়ের । এই কুড়মি সম্প্রদায়ের মোট ৮১ টি গোষ্ঠী রয়েছে। এ রাজ্যের কমবেশি ৩০ টি বিধানসভা আসন ও ৪ টি লোকসভা আসনে কুড়মি ভোট ব্যাঙ্ক নির্নায়ক ভূমিকা নেয়। বাঁকুড়া জেলায় রানীবাঁধ, রাইপুর ও তালডাংরা এই তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে ও বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে নির্নায়ক কুড়মিরা।

কুড়মিদের নিজস্ব ধর্মাচরনের রেওয়াজ রয়েছে। আদি অনন্ত কাল ধরে তাঁরা প্রকৃতির উপাসক। পাহাড়, গাছ, মাটি,জল তাঁদের উপাস্য দেবতা। প্রতিটি গ্রামে একটি প্রাচীন গাছকে কেন্দ্র করে থাকা নিজস্ব গরাম থানে বছরের নির্দিষ্ট দিনে প্রকৃতির পুজো করেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। সামাজিক রীতিনীতি থেকে জীবনযাত্রা, ধর্মাচরণ থেকে সংস্কৃতি সব কিছুতেই প্রাচীনতার ছাপ স্পষ্ট। কুড়মিদের নিজস্ব কুড়মালি ভাষা রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব নাচ ও গানের আঙ্গিক । সারনা ধর্মের এই সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি হিন্দু ধর্মের সঙ্গে যতনা মেলে তার থেকে অনেক বেশি মেলে সাঁওতাল বা অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে। এই সম্প্রদায়ের মূল উৎসব করম উৎসব। স্বাধীনতার পর গুরুত্ব হ্রাস পেলেও প্রতিটি গ্রামে কুড়মিদের নিজস্ব মোড়ল কেন্দ্রীক বিচার ও শাসন ব্যবস্থা রয়েছে। অর্থনৈতিক ও শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে থাকা এই সম্প্রদায়ের মানুষের দাবী দেশ স্বাধীনের আগে পর্যন্ত হওয়া জনগনায় তাঁদের আদিবাসী হিসাবে চিহ্নিত করে এসেছে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। পরবর্তীতে অজানা কারনে ১৯৫০ সালে তাঁদের সেই তকমা ঘুচে যায়। পরবর্তীতে ১৯৫১ সাল থেকে প্রতি দশ বছর অন্তর জনগননায় কুড়মিরা সাধারণ জাতি হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। গত শতকের সত্তরের দশকে প্রথম কুড়মিরা আদিবাসী হিসাবে স্বিকৃতীর দাবী তুলতে শুরু করেভ। পরবর্তীতে তাঁদের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেনীভূক্ত করা হলেও আদিবাসী তকমা দেওয়া হয়নি। কুড়মিদের লাগাতার আন্দোলনের ফলস্বরূপ ২০১৭ সালে কালচারাল রিসার্চ ইন্সটিটিউটকে সমীক্ষা করিয়ে রাজ্য সরকার বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য কেন্দ্রের কাছে পাঠায়। পরবর্তীতে সেই সুপারিশের ভিত্তিতে একাধিক পয়েন্টের বিস্তারিত তথ্য রাজ্যের কাছে চেয়ে পাঠায় কেন্দ্র। কিন্তু অভিযোগ রাজ্য সরকার সেই বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে গড়িমসি করছে। অবিলম্বে রাজ্য এই দাবী না মানলে আগামীদিনে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুড়মি নেতৃত্ব।