আলিপুরদুয়ার : খাগড়াবাড়ি থেকে বাসে উঠেছিলেন তন্ময় সাহা। পেশায় ব্যাঙ্ক কর্মী। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের একটি বাসে চেপে আসছিলেন আলিপুরদুয়ারের দিকে। সঙ্গে ছিল একটি ব্যাগ। বাসে উঠে বাঙ্কারে তুলে রেখেছিলেন ব্যাগটি। কিন্তু আলিপুরদুয়ার পৌছে তাড়াহুড়োর মধ্যে ব্যাগটি নিতে ভুলে যান তন্ময় বাবু। যখন বুঝতে পারেন, ব্যাগটি ফেলে এসেছেন… তখন তাঁর মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা। কারণ, ব্যাগের ভিতরে ছিল ৬২ হাজার টাকা। তাও আবার নিজের নয়। ব্যাঙ্কের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের বিজনেস করসপনডেন্স এজেন্টের টাকা। তড়িঘড়ি দ্বারস্থ হন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের। সোজা চলে যান বাস ডিপোয়। সেখানে গিয়ে কর্তব্যরত ডিপো ইনচার্জকে গোটা বিষয়টি জানান।
কিন্তু তারপর যা ঘটল, তার জন্য হয়ত তন্ময়বাবুও এতটা প্রস্তুত ছিলেন না। তন্ময় বাবুর থেকে ব্যাগ ও বাসের গোটা বিবরণ শুনে, তাঁর হাতে ওই ফেলে আসা ব্যাগটি তুলে দেন ডিপো ইনচার্জ। ব্যাগের মধ্যেই টাকা-কড়িও সব ঠিকঠাকই আছে। আসলে বাস থেকে সব যাত্রী নেমে যাওয়ার পর, ওই বাসের চালক বিনয় রায়ের নজরে পড়ে ব্যাগটি। তিনি ও তাঁর সহকর্মী বাসের কন্ডাকটর ওই ব্যাগটি এনে জমা দেন ডিপোয়। ৬২ হাজার টাকা সহ ব্যাগটি ফিরে পেয়ে খুশি তন্ময় বাবু।তিনি ওই বাসের চালক ও কন্ডাকটরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এনবিএসটিসির আলিপুরদুয়ার ডিপোর এই দুই কর্মীর সততায় মুগ্ধ সকলে।
এই বিষয়ে বাস ডিপোর এক কর্মী জানিয়েছেন, “আমাদের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের যে কর্মীরা আছেন, তাঁরা প্রায় প্রতিদিনই তাঁদের সততার নির্দশন রাখেন। বেশ কয়েকমাস আগে একজন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা হারিয়েছিলেন। আমরা ডিপোতে সব পদ্ধতি মেনে সব টাকা ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। আজ আবার একজন যাত্রী তাঁর ব্যাগ ভুল করে ফেলে চলে এসেছিলেন। আমাদের ডিপোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। যে গাড়িতে তিনি ফেলে এসেছিলেন ব্যাগটি, ওই গাড়ির চালক ও কন্ডাক্টর আবার সততার নজির রাখলেন। পদ্ধতিগতভাবে সব নিয়ম মেনে আমরা ৬২ হাজার টাকা তাঁর (তন্ময় সাহা) হাতে তুলে দিলাম।”