আলিপুরদুয়ার : মঙ্গলবার দুপুরে আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে সভা ছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। চাঁদিফাটা রোদ্দুর। মাথার উপরে সূর্যের তখন রুদ্র রূপ। তবে নেত্রীকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ কি আর কেউ হাতছাড়া করে? তাই রোদের সেই তেজের তোয়াক্কা না করেই ভিড় জমেছিল আলিপুরদুয়ার প্য়ারেড গ্রাউন্ডে। সেখানে পরিবারের সঙ্গে এসেছিল ছোট্ট মুসকানও। মাত্র ১১ বছর বয়স। ক্লাস ফাইভে পড়ে। রাজনীতির কচকচানি বোঝে না সে। কিন্তু তাও আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া থেকে এসেছিল মুখ্যমন্ত্রীকে একবার চোখের সামনে দেখতে। মূল মঞ্চের কাছেই ছিল সে। ডানদিকে। এমন গনগনে রোদ আর গরমে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে মুসকান পারভিন। প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।
দুপুর তখন প্রায় ১ টা। মুখ্যমন্ত্রী সভামঞ্চে উঠেছেন। ঝাঁঝালো আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধীদের। দলীয় কর্মীদের তাঁতিয়ে দিচ্ছেন স্বমহিমায়। সবে আধ ঘণ্টা মতো এগিয়েছে মমতার কথা। হঠাৎই ভিড়ের মধ্যে থাকা মুসকান অসুস্থ হয়ে পড়ে। ভিড়ের মধ্যেও বিষয়টি নজরে আসে মমতার। বক্তৃতা থামিয়ে দেন তৎক্ষনাৎ। ভিড়ের উদ্দেশে জানতে চান, “অসুস্থ হয়েছে? আমার কাছে জল আছে…”। এরপরই নিজের জলের বোতলটি ছুড়ে দেন সেদিকে। শুধু তাই নয়, সভাস্থলে কোনও চিকিৎসক আছে কি না, তাও জানতে চান তৃণমূল সুপ্রিমো। এরপর চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা না করেই মঞ্চ থেকে নেমে কিশোরীর দিকে এগিয়ে যান তিনি। অসুস্থ মুসকানকে নিয়ে আসেন মঞ্চের উপর। জল খাওয়ান। মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। নিজেই মুসকানের নাড়ি পরীক্ষা করে দেখেন।
শুধু মুসকানই নয়, আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভায় যোগ দিতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছে মোট তিন জন। আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকের উত্তর মসজিদ থানা এলাকার বৃদ্ধ নগেন্দ্র রায়ও এসেছিলেন মমতার সভায়। বয়স ৮০ বছর। তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রচণ্ড গরমে সান স্ট্রোক হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান। এছাড়া, আভা বারিক নামে কার্তিকা চা বাগান এলাকার বছর পনেরোর এক কিশোরীও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।