আলিপুরদুয়ার: থানায় গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের আলিপুরদুয়ারের শামুকতলা থানার পুলিশের।
যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার তৃণমূল নেতাদের সংযত হওয়ার বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে তৃণমূল নেতাদের থানায় গিয়ে হুমকি, দুর্ব্যবহার ও সরকারি কাজে বাধা সহ একাধিক অভিযোগে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করতে হচ্ছে পুলিশকে।
ঘটনার সূত্রপাত আলিপুরদুয়ার দু’নম্বর ব্লকের। সেখানে এক তৃণমূল কিষাণ ক্ষেত মজুর সংগঠনের নেতাকে পুলিশ আটক করে। তাঁকে ছাড়াতে শামুকতলা থানায় ঢুকে পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, কাজে বাধা, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ দেবজিৎ সরকারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ দেবজিতের সঙ্গে আরও বেশ কিছু তৃণমূল নেতা এবং কর্মী ছিলেন। তাঁরাও থানায় তাণ্ডব চালায়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ওই তৃণমূল নেতা সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা শুরু করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় থানায় ঢুকে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীকে হুমকি, দুর্ব্যবহার, উঁচু গলায় কথা ছাড়াও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে পুলিশ। এই ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ৩৫৩, ১৮৬ এবং ১৮৫ /১৮৪ ধারায় মোটর ভিকেইলস আইনে মামলা দায়ের করেছে।
যদিও, দেবজিৎ সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
শামুকতলা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ারের শামুকতলা থানার ওসি অভিষেক ভট্টাচার্য পেট্রোলিং করে ফেরার পথে শামুকতলা এলাকার হাতিপোতা মোড়ের কাছে একটি গাড়ির ভেতরে বসে এক তৃণমূল নেতা সহ তিনজনকে মদ খেতে দেখেন। এরপর ওসি তাঁদের ধরে থানায় নিয়ে আসেন থানায়। তখনই শামুকতলা থানার ওসির কাছে তৃণমূল নেতা দেবজিৎ সরকার ফোন করে তাঁদের দলের নেতা এবং কর্মীদের ছেড়ে দিতে বলেন।
যদিও, অভিষেকবাবু জানান আইন মেনে ছাড়া হবে। এর জন্য থানায় কাউকে পাঠাতে হবে। ওই ঘটনার পর রাত দু’টো নাগাদ দেবজিৎ সরকার সহ আরও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীরা থানায় আসেন। পিআর বন্ডের মাধ্যমে ধৃত ওই তিনজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। অভিযোগ, সে সময় শামুকতলা থানায় কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসারকে হুমকি, দুর্ব্যবহার করেন দেবজিৎ।
এই ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে জেলা পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী টেলিফোনে জানান ঘটনা সত্যি ,একটি মামলা দায়ের হয়েছে।আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কানজিলাল বলেন, ‘শাসক দলের নেতারা থানাকে পার্টি অফিস মনে করেন।’ দোষিদের গ্রেফতার করার দাবি করেন তিনি।