জলপাইগুড়ি: সিনেমা দেখে নিজের জীবন সংগ্রামের কথা মনে পড়ে গেল পুলিশ সুপারের। ক্যামেরার সামনে শোনালেন নিজের জীবনের টুয়েলভথ ফেল থেকে সফল হওয়ার গোপন কাহিনী। IPS অফিসার মনোজ শর্মার জীবন কাহিনী নিয়ে বিধু বিনোদ চোপড়ার তৈরি ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমাটি (12th Fail Movie) কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছিল। যদিও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির সময় সিনেমাটিকে নিয়ে সেরকম মাতামাতি দেখতে পাওয়া না গেলেও ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তির পরেই বদলে যায় ছবিটা। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও সিনেমাটি নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। ছবিটি আদপে গরিব পরিবারের এক যুবকের কঠিন জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আইপিএস অফিসার হয়ে ওঠারই গল্প বলছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করেও কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে IPS অফিসার হওয়া যায় তাই শিখিয়েছেন মনোজ শর্মা। এবার যেন তেমনই এক পুলিশ কর্তার খোঁজ মিলল বাংলার বুকে।
‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমার সঙ্গেই যেন নিজের জীবনের মিল পেলেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহাল। অনেকটাই মিলে গেল তাঁর জীবনের লড়াইয়ের কাহিনী। মহারাষ্ট্রের মাহিরাভনি গ্রামে বেড়ে ওঠা। উচ্চমাধ্য়মিক পরীক্ষায় ইংরেজিতে পেয়েছিলেন ২১। পাশ করতে পারেননি। পড়া ছেড়ে বাবার সঙ্গে দুধ বিক্রি করতেন। চাষাবাদে মন দিয়েছিলেন। তখন ভেবেছিলেন এটাই হতে চলেছে তাঁর ভবিষ্যৎ। কিন্তু, দু’বছরের মাথায় ঘুরে দাঁড়ান নিজেই। দুধ বিক্রি ছেড়ে ফের মন দেন পড়াশোনায়। সিভিল সার্ভিসে উত্তীর্ণ হয়ে আজ সফল IPS অফিসার হয়ে জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপারের দায়িত্ব রয়েছেন তিনি। দক্ষতার পালন করছেন নিজের কাজ। তবে আজও সময় পেলেই তিনি চলে যান ছাত্রছাত্রীদের কাছে। নিজের জীবনের ব্যর্থতা থেকে সাফল্যের শীর্ষে ওঠার গল্প শুনিয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টাও করেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে জলপাইগুড়ি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের দফতরে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন উমেশবাবু। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুনিয়ে গেলেন নিজের জীবনের গোপন কাহিনী। তাঁর কথায়, জীবনে ইচ্ছাটাই শেষ কথা। একইসঙ্গে বলেন, ইচ্ছার পাশাপাশি যদি কারও গোল অর্থাৎ টার্গেট ঠিক করা থাকে তবে তিনি অবশ্যই এগিয়ে যাবেন। তাঁর অদম্য ইচ্ছার কাছে অবশ্যই হার মানবে পৃথিবীর সমস্ত প্রতিকূলতা। তিনি অবশ্যই সফলতা পাবেন।
তিনি এও জানাচ্ছেন, গত দু’দিন আগে সপরিবারে তিনি টুয়েলভথ ফেল সিনেমাটি দেখেছেন। নিজের জীবন আরও একবার ঝালিয়ে নিয়েছেন। এবার তাঁকে নিয়েও কেউ কি সিনেমা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে মুচকি হেসে পাশ কাটিয়ে চলে যান লাজুক স্বভাবের IPS অফিসার।