TV9 বাংলা ডিজিটাল: সাংগঠনিক ভিত নমনীয় হওয়ার ভয় পাচ্ছেন কি নেত্রী? নাকি এবার পদ্মশিবিরকে রুখতে ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ হয়ে দাঁড়াবেন তিনি? বাঁকুড়ার সভায় দাঁড়িয়ে বলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee in Bankura) কয়েকটি কথায় এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দলে যে তাঁর রাশ কিছুটা হালকা হয়েছে, সেকথা অকপটে স্বীকার করে নিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ভুল শুধরে বললেন, “সরকার যেমন দেখছি, এ বার থেকে দলও আমিই দেখব। একটু ঢিলে দিয়েছিলাম, এ বার আমিই দেখব।”
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, একুশের আগে মোদী-শাহ জুটি যেখানে দিল্লি থেকে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের টিকি ধরে রেখেছেন, সেখানে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের একেবারে নীচু স্তর পর্যন্ত সাংগঠনিক কাঠামো যে নড়বড়ে হয়েছে, তা ভালোভাবেই আঁচ করতে পেরেছেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। তাঁর দলের প্রতিই তাঁর এই বার্তা।
আসলে ঘাসফুলের উত্থান বাংলার মাটিতেই। আর সেই ভিতেই তার রাশ! অর্থাত্ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালোভাবেই জানেন যে কাঠামো নিয়ে ৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন ঘটিয়েছিলেন তিনি, সেই রাশ আজ কিছুটা হলেও হালকা। দলের ফাটল ধরছে, মেরামতির প্রয়োজন। আর সেই ক্ষত সারানোর ঔষধ যে তিনিই জানেন!
বাংলা এখন মূলত দুই রাজনৈতিক শিবিরের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র! একুশের আগে বাংলা দখলে আঁটঘাট বেঁধেছে মোদী-শাহ জুটি। দিল্লির ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই বিহার ও বাংলা জয়ে একই স্ট্র্যাটেজি নিয়েছেন তাঁরা। বিহার তাঁদের দখলে। এবার নজর বাংলায়।
বাংলায় ঘর গোছাতে, সংগঠনকে আরও মজবুত করতে আর কড়া নজরদারিতে রাখতে পাঁচটি জোনে বিভক্ত করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপির পাঁচটি সাংগঠনিক জ়োনের প্রতিটিতে এক জন করে পর্যবেক্ষক এবং আহ্বায়কও নিযুক্ত করা হল। তাঁরা প্রত্যেকেই রাজ্যস্তরের নেতা। ওই নেতাদের দায়িত্বে থাকছেন এক জন করে কেন্দ্রীয় নেতা। এইভাবে গোটা সাংগঠনিক কাঠামোকে স্তরে স্তরে সাজানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কে কোথায় যাচ্ছে…দিদি সব জানে! শুভেন্দুকে ইঙ্গিত করেই কি বললেন মমতা?
একুশের নির্বাচনের আগে সংগঠনকে একেবারের জালের মতো বিছিয়ে দিতে চাইছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর ঘাসফুল শিবিরে কোমর বেঁধে প্রস্তুত নেত্রী স্বয়ং। একদিকে, দলের নেতাদের অবস্থান মেপে নেওয়া, সঙ্গে পদ্ম শিবিরকে টেক্কা দেওয়া- এবার একাই বুঝে নেবেন তিনি! ঝাঁঝালো কন্ঠে বাঁকুড়ার সভা থেকে সেই বার্তাই দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।