মালদা: টিভি ৯ বাংলার খবরের জের। অবশেষে হরিশচন্দ্রপুর থানার হলদিবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিতর ন্যায্য মূল্যের দোকান বন্ধ হল। পাশাপাশি মুছে দেওয়া হল ‘ন্যায্য মূল্যের দোকান’ লেখাটি। এই বিষয়ে প্রশাসন জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। পাশপাশি অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা এসে দেখি স্কুলের ভিতর চলা দোকানটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর ন্যায্য মূল্য লেখা ছিল সেটিও মুছে দেওয়া হয়েছে।’
কী ঘটেছিল?
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার হলদিবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রবিবার অর্থাৎ ১৩ নভেম্বর সেখানকার একটি খবর সম্প্রচার করে টিভি ৯ বাংলা। দেখা যায় স্কুলের ভিতরেই রমরমিয়ে চলছে ‘নায্য মূল্যের মুদিদোকান’। আর স্কুলের শিক্ষকরা ব্যস্ত থাকেন দোকানদারিতে। অভিযোগ, ওই বিদ্যালয়ে নাকি শিক্ষকদের দেখাই মেলে না। এই ঘটনাতেও নাম জড়িয়েছে শাসক দল তৃণমূলের।
ওই স্কুলের অন্যতম সহকারী শিক্ষক, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মানিক দাস। অভিভাবকদের দাবি, তিনি নাকি কার্যত ভুলেই গিয়েছেন স্কুলের পথ। বেশির ভাগ দিনই নাকি স্কুলে যান না তিনি। এই নিয়ে অভিভাবকরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন স্কুলে। বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি অভিভাবকদের। তাঁরা বলছেন, নিয়মিত ক্লাস হয় না এই স্কুলে। শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের দিয়ে স্কুল পরিষ্কারের কাজ করান। স্কুলের ভিতরে চলছে ন্যায্য মূল্যের দোকান। শিক্ষক হিমাংশু দাস এবং তাঁর স্ত্রী পিঙ্কি দাস দোকান খুলেছেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ক্লাস না করিয়ে সেখানে দোকানদারি করতে বসানো হয় ছাত্রদেরও। পড়াশোনা তো দূরের কথা প্রার্থনা সঙ্গীতও নাকি গাওয়া হয় না নিয়মিত। অজয় রায় নামে এক অভিভাবক জানান, পঠন পাঠনের অবস্থা এত খারাপ যে টিউশনে না দেওয়া হলে কিছু শিখতেই পারছেন না পড়ুয়ারা।
অভিভাবকরা বলছেন, বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও। যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে এই বিক্ষোভকে বিরোধীদের চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতা মানিক দাস। তাঁর দাবি, দলের কাজে তিনি মাঝে মধ্যে ছুটি নেন, একথা সত্যি। তবে স্কুলে আসেন না, তা নয়। এটা আসলে বিরোধী দলের লোকজন ষড়যন্ত্র করে প্রচার করছে বলে দাবি করেছেন তিনি। আর মুদিখানা দোকান? সে ব্যাপারে তিনি নাকি তেমন কিছুই জানেন না। এই খবরই সম্প্রচার করে টিভি ৯ বাংলা। সেই খবরের জেরে এবার বন্ধ করা হল দোকান