বাঁকুড়া: ‘হয় কাজ দিন, না হয় মৃত্যু দিন’, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঁকুড়া জেলা শাসকের অফিসের বাইরে এই দাবিতেই তুমুল বিক্ষোভ দেখা গেল। জেলা শাসকের অফিসের সামনে রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ দেখালেন জেলার আপদ মিত্ররা। এই আপদ মিত্রদের মূলত অস্থায়ী ভিত্তিক ভলান্টিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন বিপর্যয় বা দুর্যোগ বা দুর্ঘটনার সময়ে। তার আগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু বাঁকুড়ার এই আপদ মিত্ররা দাবি করছেন, গত প্রায় দেড় বছর ধরে তাঁদের কোনও কাজে ব্যবহার করা হয়নি। এমন অবস্থায় এর আগেও তাঁরা আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছিলেন। কিন্তু তারপরও কোনও কাজের সুবিধা তাঁরা পাননি।
তাই বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের এক দফা প্রতিবাদে নেমেছেন তাঁরা। জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করার দাবিতে এদিন রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এদিন প্রতিবাদ দেখানোর সময় কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘এর আগের বার আমাদের দাবি ছিল, হয় কাজ দিন, নাহলে বিষ দিন। দেড় বছর হতে চলল, আমরা কোনও কাজ পাচ্ছি না। আমরা বার বার জেলাশাসকের অফিসে আমাদের আবেদন জানিয়ে এসেছি। কিন্তু এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। আমরা কী করব, ভেবে পাচ্ছি না।’
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ২০২২ সালে তাঁরা আপদ মিত্রের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এমন অবস্থায় তাঁদের বক্তব্য, ‘কোনও সুরাহা হচ্ছে না। কোনও কর্ণপাত করা হচ্ছে না। বাড়িতে আমাদের অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। এত উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে আমরা শুধু কাজের দাবি করছি। এটা কি আমাদের পাওনা নয়? আমাদের বলা হয়েছিল, বিপর্যয়ের সময় ডাকা হবে। কিন্তু কেন ডাকা হচ্ছে না?’
এখানে উল্লেখ করে রাখা প্রয়োজন, আপদ মিত্রদের কাজ কোনও স্থায়ী চাকরি নয়। কোনও বিপর্যয় বা দুর্যোগের পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই আপদ মিত্রদের ব্যবহার করা হয়। ন্যাশনাল ডিজাজটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে পাঁচ হাজারেরও বেশি আপদ মিত্র ভলান্টিয়ার রয়েছেন। তার মধ্যে প্রায় ৪০০ পশ্চিমবঙ্গে। পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলাতেও আপদ মিত্রদের ব্যবহার করা হয়েছিল।