বাঁকুড়া: বাঁকুড়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গন্ধেশ্বরী নদী এককালে ছিল শহরের প্রাণভোমরা। অবশ্য সে চেহারা এখন অনেকটাই মলিন। মজে গিয়েছে নদী। তবে বর্ষা এলে আবার দু’কূল ছাপিয়ে যায় জলে। আবর্জনা জমে নদীগর্ভ উঁচু হয়ে গিয়ে বর্ষার মরশুমে এই সমস্যা হত। আর আবার আরও নতুন সমস্যা। গন্ধেশ্বরী নদীর বুঁকে জমা হয়েছে পাহাড় প্রমাণ বালির স্তূপ। নদীর ধারে এসে সারি সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে প্রায় কয়েকশো ডাম্পার। সেখান থেকে বালি সরবরাহ করা হচ্ছে ঠিকাদারদের।
অভিযোগ উঠছে, পুরসভার মদতেই এই বালির স্তূপ জমা করা হয়েছে নদীবক্ষে। শুধু সরকারি প্রকল্পের জন্যই নয়, তার বাইরেও অবৈধভাবে বালি বিক্রি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। আর অনেকক্ষেত্রেই বিনা চালানে বালি সরবরাহের অভিযোগও উঠে আসছে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সরব হতে শুরু করেছেন বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা। নদীবক্ষের উপর এভাবে বালি মজুত করা নিয়ে ইতিমধ্যেই মহকুমাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা। মহাকুমাশাসকের কাছে দরবার করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। সরব হয়েছে গন্ধেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটি ও অন্যান্য পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলিও।
বর্ষার মরশুমে এমনিতেই নদীর দু’কূল ছাপিয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে জল ঢুকে যায়। এবার নদীবক্ষে এভাবে বালির স্তূপ জমা হলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল বাঁকুড়া পুরসভার উপ পুরপ্রধান হীরালাল চট্টরাজের সঙ্গে। পুর কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, জেলাশাসকের অনুমতিতেই কাজ হচ্ছে। সরকারি প্রকল্পে শহরের বাড়ি নির্মাণের কাজে যাতে বালি দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়, সেই কারণেই এই ব্যবস্থা বলে জানানো হচ্ছে। তবে নদীবক্ষে বালি মজুত করা হয়েছে কি না, সেই বিষয়টি পুরসভা খতিয়ে দেখবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়াতে শুরু করে দিয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। নদীবক্ষে বালি মজুত করার বিষয়টি বিধানসভাতেও তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ।