বাঁকুড়া: লরিতে যান্ত্রিক কিছু গোলোযোগ দেখা দিয়েছিল। রাস্তার ধারে লরিটিকে দাঁড় করিয়ে মেরামতি করছিলেন চালক ও খালাসি। সে সময়েই উল্টো দিক থেকে সজোরে একটা বালি বোঝাই ডাম্পার এসে ধাক্কা মারে। একেবারের ডাম্পারের নীচে ঢুকে যান দু’জন। বাকি দু’জনের শরীর আটকে যায় লরিতেই। একটি লরির সঙ্গে বালি বোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে চার জনের। বুধবার ভোরে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার কোতুলপুর থানার রায়বাঘিনী মোড়ের কাছে। ঘটনায় ১৩ টি গরুরও মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কারণ ওই লরিটিতে গরু বোঝাই করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লরিটি ঘটকপুকুর গ্রামে যাচ্ছিল। কোতুলপুরের রায়বাঘিনীর কাছে লরিটির যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ায় রাস্তার ধারে দাঁড় করিয়ে মেরামতি করছিলেন চালক ও খালাসি। সেই সময় বিষ্ণুপুর থেকে আরামবাগগামী একটি বালি বোঝাই ডাম্পার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। গরু বোঝাই লরিটিকে ধাক্কা মেরে ডাম্পারটি স্থানীয় একটি বাড়িতে গিয়ে ধাক্কা মারে। ওই বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন স্থানীয় এক দম্পতি। ডাম্পারটি বাড়িটিতে ধাক্কা মেরে থেমে যাওয়ায় কোনওক্রমে প্রাণে বাঁচেন ওই দম্পতি। মৃত চার জনের মধ্যে তিনজন গরু বোঝাই লরির যাত্রী। একজন ডাম্পারের খালাসি। মৃত তিনজনেরই বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ঘটকপুকুর গ্রামে বলে জানা গেছে।
রক্তাক্ত হয়ে যায় গোটা এলাকা। এতগুলো লাশ পরপর দেখে শিউরে উঠছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গরুগুলির দেহ লরির মধ্যে আটকে রয়েছে। অন্যদিকে চার ব্যক্তির দেহ লরি ও ডাম্পারের নীচে এমন ভাবে আটকে যায়, সেগুলিকে বার করে আনতেও সমস্যা হয়।
গাড়ির সামনের অংশ কেটে দেহগুলি বার করে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কোতুলপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা ঘটনাটি চোখের সামনে দেখি নি। অনেকটা ভোরেই হয়েছে। তবে বিকট একটা শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। এলাকার অবস্থা ভয়াবহ। এতগুলো লাশ। সে দৃশ্য চোখে দেখা যায় না।”