বাঁকুড়া: জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি ৬০ শতাংশ, আমন চাষ নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে জেলার কয়েকলক্ষ চাষি। গতবছর বৃষ্টি না পেয়ে জেলার পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি জমি থেকে গিয়েছিল অনাবাদী। এবার জুলাই শেষ হতে চললেও ভারি বৃষ্টির দেখা নেই বাঁকুড়া জেলায়। কৃষি দফতরের হিসেবে এখনও পর্যন্ত বাঁকুড়া জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি ৬০ শতাংশ। ফলে জুলাইয়ের শেষেও মাত্র ৩ শতাংশ জমিতে আমন রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন জেলার আমন চাষিরা।
যদিও বাঁকুড়া জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে এখনই আশঙ্কার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এখনও প্রতৃতি সহায় হলে আমন চাষ হবে স্বাভাবিক ভাবেই।
বাঁকুড়া জেলার অধিকাংশ জমিতেই সেচের তেমন সুবিধা নেই। ফলে এই জেলার অধিকাংশ জমির আমন চাষ বৃষ্টি নির্ভর। গতবছর এল নিনোর প্রভাবে সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অধিকাংশ জমিতে ধান রোপণের কাজ করতে পারেননি জেলার অধিকাংশ কৃষক। এবার জুলাইয়ের দুই তৃতীয়াংশ পেরিয়ে গেলেও এখনও ভারি বৃষ্টি না পাওয়ায় আমনের জমি তৈরির কাজ শুরুই করতে পারেননি জেলার আমন চাষিরা।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন ও জুলাই মাস মিলিয়ে বাঁকুড়া জেলায় সাধারণত বৃষ্টিপাত হয় ৫৪৬ মিলিমিটার। এর মধ্যে শুধুমাত্র জুলাই মাসেই বৃষ্টি হয় ৩১৯ মিলিমিটার। এবছর জুন ও জুলাই মিলিয়ে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ২১৪ মিলিমিটার। শুধুমাত্র জুলাই মাসে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১০১ মিলিমিটার। অর্থাৎ বর্ষার দু’মাস মিলিয়ে জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি প্রায় ৬০ শতাংশ। কৃষি দফতর চলতি বছর জেলায় আউশ ও আমন মিলিয়ে খারিফ চাষের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে মাত্র ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোপণের কাজ হয়েছে।
জুলাই এর ২০ তারিখ পর্যন্ত মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ সম্ভব হয়েছে। কৃষি দফতরের দাবি, এর বেশিরভাগ অংশই সেচসেবিত জমি। এদিনে জলের অভাবে রোপণের জমি তৈরি না হওয়ায় অধিকাংশ বীজতলায় ধানের চারার বয়স ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশি বয়সের চারা রোপণ করলে সেক্ষেত্রে ফলন হ্রাস পাওয়ার যেমন সম্ভাবনা থাকছে তেমনই ভারি বৃষ্টি না হলে চারা আদৌ রোপণ করা যাবে কিনা তা নিয়েও চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
যদিও কৃষি দফতর জানিয়েছে ধান রোপনের জন্য এখনো অনেকটা সময় হাতে রয়েছে। এর মধ্যে ভারি বৃষ্টি হলেই রোপন প্রক্রিয়া গতিলাভ করবে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই ভারি বৃষ্টির অপেক্ষাতেই এখন হা পিত্যেশ করে বসে রয়েছে জেলার লক্ষ লক্ষ আমন চাষি।