বাঁকুড়া: বৃষ্টিতে ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু দু’জনের। মৃত দুজনের নাম পার্বতী ঘোষ ও অনঙ্গ ঘোষ। শনিবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া দু নম্বর ব্লকের ভূতশহর গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো এদিন ভোরে গ্রামের রাস্তায় প্রাতঃভ্রমণে বের হন পার্বতী ঘোষ। শুক্রবারের বৃষ্টিতে ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুৎবাহী তারে কোনওভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনি রাস্তার পাশে লুটিয়ে পড়েন। ওই মহিলাকে পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে স্পর্শ করলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন ওই গ্রামেরই অনঙ্গ ঘোষ নামের অপর এক ব্যাক্তি।
ঘটনার কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারের সঙ্গে সংযুক্ত অবস্থায় দু’জনকে পড়ে থাকতে দেখেন। লাঠি দিয়ে কোনওক্রমে তারটিকে সরিয়ে দু’জনকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়।
এরপরই ওই দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। স্থানীয়দের দাবি, বিদ্যুতের তার বেশ কিছুদিন ধরে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছিল। বিষয়টি বিদ্যুৎ দফতরকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ দফতর তারটির মেরামতি না করাতেই ওই দু’জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এক সঙ্গে গ্রামের দু’জনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মৃতের আত্মীয় সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “খুব খারাপ পরিস্তিতিতে তারটা ছিল। বিদ্যুৎ দফতরের দরকার আগে থেকেই এই বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখা। এখন বর্ষাকালে, বিদ্যুৎ দফতর আগে থেকে সচেতন না হলে এমন মর্মান্তিক পরিণতি আরও হতে পারে।” বিদ্যুৎ দফতরের এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসীরা।
ওন্দার বিধায়ক বলেন, “বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিতেই এটা ঘটল। বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে কেবিলের ব্যবস্থা করা উচিত। তা না হলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। ”
প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই কলকাতার হরিদেবপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের। সেক্ষেত্রেই জমা জলের মধ্যে বিপজ্জনকভাবে তার ছিঁড়ে পড়েছিল। একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বাচ্চা ছেলেটি জলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। তার পায়ে লাগতেই ছিটকে পড়ে সে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু। এক্ষেত্রেও কলকাতা পৌরসভা ও বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।