Bankura: অবাক জলপানের নতুন সংযোজন DVC-র জল! চাইলেও পাচ্ছেন না চাষিরা, হঠাৎ কী হল?

Hirak Mukherjee | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Dec 19, 2024 | 2:57 PM

Bankura: বাঁকুড়া জেলায় কমবেশি ৬৬৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে ডিভিসির দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে পাওয়া সেচের জলে বোরো চাষ হয় ১৫ হাজার ২৫০ হেক্টর। এবং কংসাবতীর মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ছাড়া সেচের জলে বোরো চাষ হয় ১৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে।

Bankura: অবাক জলপানের নতুন সংযোজন DVC-র জল! চাইলেও পাচ্ছেন না চাষিরা, হঠাৎ কী হল?
জল পাবেন না কৃষকরা?
Image Credit source: Tv9 Bangla

Follow Us

বাঁকুড়া: সুকুমার রায়ের ‘অবাক জলপানের’ গল্প পড়েছেন নিশ্চই? নাকের জল, চোখের জলের পর এবার যেন নতুন সংযোজন ডিভিসির জল। হাপিত্যেস করে চাষিরা  বসে থাকলেও পাচ্ছেন না। কারণ নাকি ডিভিসির সঙ্গে রাজ্যের ঠান্ডা লড়াই।

বর্ষায় দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া নিয়ে ডিভিসি-র ( DVC) সঙ্গে বিবাদ বেধেছিল রাজ্যের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম।” এমনকী ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) ডিভিআরআরসি থেকে পদত্যাগও করেছেন বাংলার দুই প্রতিনিধি। সেই বিবাদের জেরে এবার কি কোপ পড়বে বোরো চাষে? কারণ, শীতের সময় রবি মরশুমে চাষের আগে DVC সেচের জন্য জল ছাড়ে। তবে রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত জল নেওয়ার কোনও আবেদন করেনি বলে সূত্রের খবর। এ দিকে, শীতের শুষ্ক মরশুমে জল না পেলে প্রায় পঁচিশ লক্ষ কৃষক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। তার মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়া। আশা-আশঙ্কার দোলাচলে বাঁকুড়া জেলার হাজার হাজার বোরো চাষি সিঁদুরে মেঘ দেখছেন।

এক সংবাদ মাধ্যমে বিজেপি সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, বোরো চাষের জন্য ডিসেম্বরের শুরু থেকেই জেলা ও ডিভিশনাল কমিশনার স্তরে রাজ্যের সঙ্গে ডিভিসির সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়। তবে এ বছর এখনও হয়নি। রাজ্যের জল নেওয়ার জন্য কোনও আবেদন করা হয়নি। বিজেপি নেতার অভিযোগ, রাজ্য সরকার সেচের জলের জন্য কোনও ব্যবস্থা করেনি।

কোথা থেকে ঝামেলার সূত্রপাত?

বর্ষাকালে বন্যার সম্মুখীন হয় রাজ্য। ভেসে যায় একের পর এক জেলা। বন্যা কবলিত এলাকায় পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল ‘ম্যান মেড বন্যা’র তত্ত্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ডিভিসি অনিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছাড়ার কারণেই বন্যায় ভাসছে রাজ্যের বিস্তীর্ণ অংশ। এই ডিভিসি-র অন্যতম স্টেক হোল্ডার কেন্দ্রীয় সরকার হলেও রাজ্যেরও প্রতিনিধিত্ব রয়েছে সেখানে। এরপর প্রতিনিধি তুলে নেন।

এ দিকে, এখনও পর্যন্ত জল না পেয়ে কপালে হাত কৃষকদের। বিশেষ করে বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান যে সব জায়গায় বোরো চাষ হয় সেখানকার কৃষকরা আশঙ্কা করছেন চরম ক্ষতির। বাঁকুড়া জেলায় কমবেশি ৬৬৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে ডিভিসির দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে পাওয়া সেচের জলে বোরো চাষ হয় ১৫ হাজার ২৫০ হেক্টর। এবং কংসাবতীর মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ছাড়া সেচের জলে বোরো চাষ হয় ১৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। বাঁকুড়ার বড়জোড়া, সোনামুখী, পাত্রসায়ের ও ইন্দাস ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো চাষ সম্পূর্ণরূপে দুর্গাপুর ব্যারেজের জলের উপর নির্ভরশীল। ডিভিসি বনাম রাজ্য চাপানউতোরের মাঝেই শুরু হতে চলেছে বোরো মরসুম। কিন্তু এখনো দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে সেচের জল মিলবে কি না, মিললে তা কবে থেকে মিলবে সে সম্পর্কে কোনও ঘোষণা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আশা ও আশঙ্কার দোলাচলের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বাঁকুড়ার বোরো চাষিরা।

কী বলছেন কৃষকরা?

আশায়-আশায় অনেক চাষি বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করলেও রোপণের জন্য এখনো জমি তৈরির কাজ শুরু করেননি চাষিরা। ডিভিসি ও রাজ্যের বিবাদে শেষ পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল না মিললে শুধুমাত্র বাঁকুড়া জেলাতেই অনাবাদী থেকে যাবে প্রায় ১৫ হাজার ২৫০ হেক্টর বোরো চাষের জমি। স্থানীয় কৃষক হারাধন বাগ্দী বলেন, “এই জলের উপরই আমাদের চাষ নির্ভর করে। এই ধান না হলে খুবই অসুবিধায় পড়ে যাব। এই বোরো চাষের উপরেই আমাদের সংসার চলে। আর ডিভিসি জল না ছাড়ে তাহলে অনাহারে মরব।”

 

Next Article