বাঁকুড়া: অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় দিল্লিতে প্রতিবাদের সুর চড়িয়েছিলেন। অবশেষে বাঁকুড়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত ৩ শিশুর পরিবার পেল আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা। বুধবারই ওই তিন পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের টাকা ঢুকতে শুরু করে। প্রশাসনের দাবি, দু-একদিনের মধ্যে সকলের টাকাই পৌঁছে যাবে অ্যাকাউন্টে। এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে ফের একবার শুরু হয়ে গেল শাসক বিরোধী চাপানউতোর।
২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের বড়ামারা গ্রামে ঘরের দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় রোহন সর্দার, নিশা সর্দার ও অঙ্কুশ সর্দার নামের তিন শিশুর। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ওই তিন শিশুর পরিবারকে দিল্লি নিয়ে যান তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আবাসের টাকা দেওয়ার দাবিতে অবস্থান শুরু করেন তিনি। এই ঘটনার এক বছর তিন মাস পর আবাসের টাকা হাতে পেলেন ওই তিন পরিবার।
টাকা তো পেয়েছেন, কিন্তু সন্তানদের হারানোর যন্ত্রণা চোখেমুখে স্পষ্ট ওই পরিবারগুলির। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পর সেভাবে পরিবারগুলিকে সাহায্য করা যায়নি। তবে এবার ওই তিনটি পরিবারই বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা করে পাবে। এই ঘটনায় ফের একবার দোষারোপ পাল্টা দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে শাসক বিরোধী শিবিরের।
বিজেপির দাবি, রাজ্যে আবাস প্রকল্পে শাসক দলের ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের কারনেই এমন হাজার হাজার উপভোক্তা বঞ্চিত হয়েছেন। দুর্নীতি বা স্বজনপোষণ না হলে আগেই তাঁরা বাড়ি পেতেন। সেক্ষেত্রে তিন সন্তানকে এভাবে অকালে হারাতে হত না। তৃণমূল অবশ্য বিতর্ক এড়িয়ে ওই ৩ পরিবারকে বাড়ি দেওয়ার সামগ্রীক কৃতিত্ব দিয়েছে রাজ্যের সরকারকেই।
সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি বলেন, ” আমরা শুনি তৃণমূল বলে কেন্দ্র বঞ্চনা করছে। বর্ষাকালে দেখি মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে। দেওয়াল চাপা পড়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তখনও কেন্দ্রকে দোষারোপ করতে শোনা গিয়েছে। কিন্তু আবাসের টাকা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এটাই আসল বিষয়।”
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গতকাল থেকে অ্যাকাউন্টে বহু মানুষের আবাসের টাকা ঢুকতে শুরু করেছে। ১২ লক্ষ আবাস যোজনার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকা শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে সবার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে। ৬০ হাজার করে প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকছে। বরামারা গ্রামের যে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাদের পরিবারের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে শুরু করেছে।”