বাঁকুড়া: প্রয়োজনীয় সম্পূর্ণ জমি অধিগ্রহণ করে তা রেলকে হস্তান্তর না করায় এক দশক ধরে থমকে ছাতনা মুকুটমনিপুর রেল প্রকল্প। শুরু শাসক বিরোধী চাপানউতোর। প্রয়োজনীয় সমস্ত জমি অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকার রেলের হাতে তুলে না দেওয়ায় এক দশক ধরে থমকে রয়েছে ছাতনা মুকুটমনিপুর রেল প্রকল্প। সম্প্রতি রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে ওই প্রকল্প সহ জমি জটে থমকে থাকা রাজ্যের প্রকল্পগুলির প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে তা রেলের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
দীর্ঘ আন্দোলনের পর দেড় দশক আগে ২০০৫ – ২০০৬ অর্থবর্ষে বাঁকুড়ার ছাতনা মুকুটমনিপুর সংযোগকারী রেলপথ নির্মাণের প্রস্তাব গ্রহণ করে রেল। স্থির হয় দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়গপুর আদ্রা শাখার ছাতনা স্টেশন থেকে ইন্দপুর ও খাতড়া ছুঁয়ে রেলপথ যাবে এ রাজ্যের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র মুকুটমনিপুরে। এজন্য প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ সেরে এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ৮০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে তা রেলের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
প্রাথমিক ভাবে ছাতনা থেকে ইন্দপুর পর্যন্ত জমি মেলায় আংশিক ভাবে রেলের তরফে জমি সমতলীকরণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু বাকি জমি না মেলায় সেকাজও থমকে যায় মাঝপথে। জানা গিয়েছে, ৮০০ একরের মধ্যে ৫১৭ একর জমি অধিগ্রহণ করলেও বাকি জমি এখনও হাতে পায়নি রেল। বাকি জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে রাজ্যের তরফে সম্প্রতি কোনও উদ্যোগও চোখে পড়েনি। ফলে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কার্যত ‘বিশ বাঁও জলে’ ডুবে রয়েছে ছাতনা মুকুটমনিপুর রেল প্রকল্পের ভবিষ্যৎ। সম্প্রতি ফের রেল মন্ত্রী রাজ্যকে জমি জট কাটিয়ে প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে রেলের হাতে তুলে দেওয়ার লিখিত অভিযোগ জানালে ফের ছাতনা মুকুটমনিপুর প্রস্তাবিত রেলপথ নির্মাণ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক আকচা আকচি।
বিজেপির দাবি, তৃণমূল পরিচালিত সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই এই প্রকল্পর হাল এমন। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, রেল মন্ত্রক টাকা না দেওয়ায় জমি অধিগ্রহণ থমকে রয়েছে। সিপিএম এই প্রকল্পের গড়িমসির জন্য বিজেপি ও তৃণমূল দু’পক্ষকেই কাঠগোড়ায় তুলেছে। সাধারণ মানুষ চায় রাজনৈতিক আকচা আকচি বন্ধ করে দ্রুত রূপায়িত হোক স্বপ্নের এই রেল প্রকল্প।
এই প্রকল্প রূপায়িত হলে একদিকে যেমন বাঁকুড়া জেলার অর্থনৈতিক চালচিত্র বদলে যাবে তেমনই মুকুটমনিপুর, শুশুনিয়া, ছাতনা ও বিষ্ণুপুর রেলপথে জুড়ে যাওয়ায় গড়ে উঠবে ট্যুরিজম সার্কিট।