AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bankura: অনাহারে মৃত্যু? পরিবারের দাবি, আধার কার্ড না থাকায় মিলছিল না রেশন

Bankura: পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক সোমনাথেরও সামান্য আয়ে নিজের সংসার চালিয়ে বাবা মা কে সাহায্য করার তেমন সামর্থ ছিল না। ফলে বৈদ্যনাথ ও কল্পনার কোনওদিন খাবার জুটতো, কোনওদিন আবার সে টুকুও জুটতো না।

Bankura: অনাহারে মৃত্যু? পরিবারের দাবি, আধার কার্ড না থাকায় মিলছিল না রেশন
বাঁকুড়ায় মৃত্যুImage Credit: Tv9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Aug 04, 2025 | 6:15 PM
Share

বাঁকুড়া: অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ উঠল বাংলায়। বাঁকুড়ার এক নম্বর ব্লকের কুমিদ্যা গ্রামের বৈদ্যনাথ দাস মোদক নামে পঁয়ষট্টি উর্ধ্ব এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। মৃতের স্ত্রী দাবি করেছেন, দীর্ঘদিন অনাহারে থাকার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, বার্ধক্য ভাতা, লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো কোনও সরকারি পরিষেবা মিলত না। কারণ, তাঁদের ছিল না কোনও আধার কার্ড। পরিবারের এই বিস্ফোরক দাবি উঠতেই শুরু হয় চাপানউতোর।

বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকের কুমিদ্যা গ্রামে বসবাস করতেন বৈদ্যনাথ দাস (৬৫)। স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সময় স্থানীয় একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতেন। তবে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আর কাজ করতে পারছিলেন না। তখন থেকেই শুরু হয় পরিবারের চরম অনটন। পরিবারের দাবি, বয়স হয়ে গেলেও কোনও সরকারি ভাতা পেতেন না বৈদ্যনাথ ও তাঁর স্ত্রী কল্পনা। নিজেদের আধার কার্ড না থাকায় রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বরের সংযোগ করা যায়নি। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পরিবারের রেশনের বরাদ্দও। বাধ্য হয়ে একমাত্র ছেলে সোমনাথ দাস মোদকের উপরেই ভরসা করে বেঁচেছিলেন বৈদ্যনাথ ও কল্পনা।

পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক সোমনাথেরও সামান্য আয়ে নিজের সংসার চালিয়ে বাবা মা কে সাহায্য করার তেমন সামর্থ্য ছিল না। ফলে বৈদ্যনাথ ও কল্পনার কোনওদিন খাবার জুটতো, কোনওদিন আবার সে টুকুও জুটতো না। স্থানীয় প্রতিবেশীরা মাঝেমধ্যে সাহায্য করতেন ঠিকই, কিন্তু তা দিয়েই বা আর কতদিন চলে।

শুক্রবার বৈদ্যনাথ দাস মোদকের মৃত্যু হয় বাড়িতেই। স্থানীয়দের দাবি, অনাহারেই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের। একই দাবি করছে পরিবারও। স্বামীহারা স্ত্রী কল্পনা ও ছেলে সোমনাথের দাবি, বারবার শিবিরে গিয়ে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ছুটে গিয়েও আধার কার্ড করানো যায়নি। আর তার জেরেই সমস্ত ভাতা এমনকী রেশন থেকেও বঞ্চিত থাকতে হয়েছে তাঁদের। সোমনাথ দাস মোদক বলেন, “বাবা খেতে পেত না। আমিও খেতে দিতে পারতাম না। বহুবার জানিয়েছি আধার কার্ড নেই। ওরা (স্থানীয় প্রশাসন) কথা শোনে না।”

যদিও, সেকথা মানতে নারাজ রাজ্যের শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরা। বৃদ্ধের মৃত্যু  অভিযোগ উড়িয়ে তাঁদের দাবি আধার কার্ড করানোর ব্যপারে ওই পরিবার অনিচ্ছুক ছিলেন। বারেবারে তাঁদের আধার কার্ড করানোর কথা বলা হলেও তাঁরা আগ্রহ দেখাননি। বাঁকুড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বয়স জনিত কারণে মৃত্যু। রেশন কার্ড ছিল। এর আগে ওরা বাড়িও পেয়েছে। তবে কেন্দ্রের ভ্রান্ত নীতি আধার লিঙ্ক বাধ্যতামূলক। সেই কারণে এমন অবস্থা। ওরা আধার লিঙ্ক করতে পারেনি।”

বৈদ্যনাথের মৃত্যুর জন্য রাজ্যের শাসক দলকে কাঠগোড়ায় তুলেছে বিজেপি। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা সরকারি প্রকল্পের কাটমানি আর দুর্নীতি নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে সাধারণ মানুষের নূন্যতম পরিষেবা নিয়ে তাঁদের কোনও মাথা ব্যথাই নেই। তাই এমন ঘটনা দেখতে হচ্ছে। বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর দানা বলেন, “আমার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে যায়। আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে এই সরকারকে দুষি না। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই এই জায়গায় বারবার যাই। আমি ওখানে গিয়ে কত খাবার দিয়ে এসেছিলাম। আমার কর্মীদের আমি বারেবারে বলি ওদের দেখতে। ওখানকার পঞ্চায়েত কী করছে?”

মৃতের স্ত্রী বলেন, “আমার স্বামী খেতে পেতেন না। না কাজ করলে খেতে পাবে কী করে? ছেলে বৌও খেতে দেয় না। আজ সকাল থেকে তেমন কিছু খাইনি। আমাদের যেহেতু আধার কার্ড হয়নি। সেই কারণে রেশনও পেতাম না।