বাঁকুড়া: ক্ষমতার অলিন্দে থাকা তৃণমূল এখন যেন বিতর্কের সমার্থক। দুর্নীতির প্রশ্নে হোক বা সন্ত্রাস, বিরোধীরা প্রতিদিন কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে রাজ্যের শাসক দলকে। এবার নয়া বিতর্ক বাঁকুড়া জেলা রাজনীতিতে। যার কেন্দ্রবিন্দু জয়পুরের হেতিয়া অঞ্চলের ব্রজশোল পার্টি অফিস। বৃহস্পতিবার সকালে সেই নির্মিয়মান অফিসের দেওয়াল, মেঝে সর্বত্রই দেখা মিলেছে চাপ চাপ রক্তের…অন্ধকারে কী ঘটল তবে? আশঙ্কা গ্রামবাসীদের অন্দরে।
ব্রজশোল গ্রামে বেশ কিছুদিন আগে একটি পার্টি অফিস বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেইমত শুরু হয়েছিল কাজ। নির্মিয়মান সেই পার্টি অফিসে এখনও শেষ হয়নি, গাঁথনি, প্লাস্টার, দরজা-জানলা লাগানোর কাজ। কিন্তু তার আগেই বিতর্ক আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে ঘরটিকে। কারণ বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী ও বাসিন্দাদের নজরে ধরা দেয় হাড় হিম করা ছবি। সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা চাপ চাপ রক্ত প্রথমে যেন হিমস্রোত বইয়ে দেয় প্রত্যক্ষদর্শীদের শরীরে। রক্তস্নাত পার্টি অফিসের খবর ক্রমশ আশেপাশের এলাকায় চাউর হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে জয়পুর থানার পুলিশ। তাদের তরফে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আপাতত গোটা ঘটনাটির তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
তবে ব্রজশোলে এখন কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। কোথা থেকে এল এই রক্ত? কী ঘটেছিল বুধবার রাতের অন্ধকারে? যদিও বিষয়টিকে নিয়ে তেমন ভাবিত নয় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, নির্মীয়মান পার্টি অফিসে এখনও দরজা-জানলা লাগানো হয়নি। যে কেউ তার ভিতরে ঢুকে পড়তে পারে। সম্ভবত রাতে কেউ সেখানে ছাগল অথবা মুরগি জাতীয় প্রাণী কেটেছে। তার থেকেই ছড়িয়েছে রক্ত। এছাড়া আর কোনও রহস্য নেই।
শাসকদল বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে না চাইলেও ঘটনাটিকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিরোধীরা। তারা রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগকে সামনে এনে রাজনৈতিক ঘুঁটি সজাচ্ছে। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ‘রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। সেই ক্ষমতার ব্যবহারে অনেক কিছুই ঘটছে উত্তর থেকে দক্ষিণে। এখানেও তেমন কোনও রহস্যাবৃত ঘটনা থাকতে পারে। কিসের রক্ত পার্টি অফিসের মেঝে থেকে দেওয়াল পর্যন্ত মিলল তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুন। রক্ত রহস্য নিশ্চয়ই সামনে আসবে।’