বাঁকুড়া: পড়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে। কম বাঁকুড়ার অয়ন দেওঘড়িয়া স্থাপন করল এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সম্প্রতি আমেরিকার আলাবামায় ইউএসস্পেস অ্যান্ড রকেট সেন্টারে আয়োজিত পাঁচ দিনের একটি প্রোগ্রামে যোগ দেয়। আমেরিকা ও মেক্সিকোর একদল ছাত্রের সঙ্গে মিলিতভাবে একটি তত্ত্ব তৈরি করেছে অয়ন। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, বিশেষ একধরনের পদার্থ তৈরি সম্ভব যা মহাকাশে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দিব্যি টিকে থাকতে পারে। প্রাথমিকভাবে মহাকাশ কেন্দ্রে সেই পদার্থ পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হবে। তা সফল হলে পরবর্তী চন্দ্র অভিযানে এই পদার্থ ব্যবহার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন স্পেস অ্যান্ড রকেট সেন্টার।
বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের মনতুমড়া গ্রামের বাসিন্দা অয়ন। তবে বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পড়ার সুবাদে তাঁকে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া একটি একট বাড়িতে ভাড়া থাকে। ছোট থেকেই রকেট সায়েন্সের প্রতি আসক্ত হয় অয়ন। বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত মহাকাশ গবেষণা সম্পর্কিত একাধিক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে অয়নের বিভিন্ন তত্ত্ব বিজ্ঞানীদের নজর কাড়ে।
বেশ কয়েকমাস আগে আমেরিকার আলাবামায় বিখ্যাত মহাকাশ গবেষণা সংস্থা মার্কিন স্পেস অ্যান্ড রকেট সেন্টার আয়োজন করে ইন্টারন্যাশানাল এয়ার অ্যান্ড স্পেস প্রোগ্রামের। সেই প্রোগ্রামে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছে অয়ন।প্রাথমিকভাবে পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে ওই প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে অয়নের পক্ষে। পরবর্তীতে ভারতেরই একটি সংস্থা তার পাশে দাঁড়ালে অয়ন পাড়ি দেয় আমেরিকায়।
১১ থেকে ১৫ নভেম্বর অ্যালবামা আয়োজিত ওই প্রোগ্রামে একমাত্র ভারতীয় হিসাবে অংশ নিয়েছে অয়ন। আমেরিকা ও মেক্সিকোর অন্য ছয় গবেষকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অয়ন তৈরি করেছে একটি পদার্থ তৈরির তত্ত্ব। যা মহাকাশের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও অবিকৃত থাকে।
অয়ন ও তার সঙ্গীদের তৈরি এই তত্ত্ব নজর কেড়েছে ওই প্রোগ্রামে উপস্থিত গবেষকদের। প্রাথমিকভাবে স্পেস স্টেশনে ওই তত্ত্বের প্রয়োগ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। সফল হলে পরবর্তীতে তা চন্দ্র অভিযানের ক্ষেত্রেও এই তত্ত্বের প্রয়োগ হতে পারে বলে অয়নকে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর তার সাফল্যে গর্বিত তাঁর মা-বাবাও। অয়ন বলে, “আমি ভগবানের কাছে ধন্যবাদ জানাই। ভগবান সাহস না জোগালে এই সাফল্য় পেতাম না।”