বাঁকুড়া: দু সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বাঁকুড়ার বড়জোড়া রেঞ্জের পাবয়ার জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৪৫টি হাতির একটি বিরাট দল। কার্যত তটস্থ জীবন যাপন করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। হাতির দলের লাগাতার হানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু জিনিস। কিন্তু সেই দলের একটি শাবক হাতির রহস্যমৃত্যু হয় সোমবার। এদিন সকালে বাঁকুড়ার বড়জোড়া রেঞ্জের গোসাইপুর গ্রামের কাছে ওই শাবক হাতিটিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। বনদফতর মৃতদেহটি উদ্ধার করে বেলিয়াতোড় রেঞ্জ অফিসে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মৃত হাতির বয়স আনুমানিক আড়াই মাসের কাছাকাছি। স্ত্রী ওই সাবক হাতিটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তবে ভোরের কাছে পুড়ে যাওয়ার চওড়া দাগ রয়েছে। অনুমান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে হাতিটির।
বড়জোড়া রেঞ্জের গোসাইপুর গ্রামের পাশে একটি ধান জমি থেকে উদ্ধার হয় হাতিটি। স্থানীয় বাসিন্দারা সকালবেলা হাতে দিকে দেখতে পেয়ে বনদফতরে খবর দেন। ঘটনাস্থলে এসে শাবকটির মৃতদেহ উদ্ধারে কার্যত বেগ পেতে হয় বনদফতরকে। কারণ সেই সময় বাকি হাতির দলের ঘেরাটোপের মধ্যে ছিল সেটি। ফলে পুরো দলটিকে সরিয়ে দেহটি উদ্ধার করা একসময় অসম্ভব হয়ে পড়ে। যদিও বহু কষ্টে পরবর্তীতে সরানো হয় গোটা দলটিকে। তারপর মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় ময়নাতদন্তের জন্য। পরে সেটিকে পুঁতে দেওয়া হয় মাটিতে।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে সুরের পোড়া দাগ বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হওয়ার তত্ত্বকেই খাড়া করছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন বারবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বাঁকুড়ায়? এ বিষয়ে বন দফতরের দাবি, সচেতনতার অভাবে বহু চাষী নিজেদের জমির ফসল বাঁচাতে আলের উপর বিদ্যুতের তারের বেড়া বানায়। সেই তারেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হচ্ছে হাতিগুলি। তাই সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করছেন দফতরের আধিকারিকরা।