কলকাতা ও বাঁকুড়া: বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে পুরুলিয়ার কুস্তাউর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে রেল-রাস্তা রোকোর ডাক দিয়েছিল কুড়মি সম্প্রদায়ের একাংশ। তবে রেল রোকো এই আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। আন্দোলনের নামে কোনও ভাবে রেল বা রাস্তা বন্ধ করা যাবে না। কড়া নির্দেশ প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের।
আন্দোলনের নামে জনজীবন স্তব্ধ করা আটকাতে সম্প্রতি পুরুলিয়া চেম্বার অব কমার্স জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে। মঙ্গলবার ছিল শুনানি। প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ এই রেল ও রাস্তা রোকো আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা করে। আন্দোলন বন্ধে রাজ্যকে আরও কঠোর হতে নির্দেশ দেয় আদালত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনে আজই রাজ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে পারে কেন্দ্রের কাছে, এমনই পরামর্শ আদালতের। প্রয়োজনে প্রতিবেশী রাজ্যের থেকেও এলাকার নিরাপত্তায় বাহিনীর ব্যাপারে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। একইসঙ্গে আরপিএফ ও জিআরপি-কে রেল নিরাপত্তা বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেয় আদালত। দরকারে অতিরিক্ত বাহিনীর ব্যবস্থা রাখতে হবে বলেও জানানো হয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, আন্দোলনের জেরে শুধু রাজ্যের চার পাঁচটা জেলা নয়, দুর্ভোগে পড়েন প্রতিবেশী রাজ্যের বাসিন্দারাও। তাই কোনও ভাবে এই নির্দেশ অমান্য করে রেল-রাস্তা বন্ধ করা যাবে না। আর তেমন চেষ্টা করা হলে বা কোনও আইন শৃঙ্খলা সমস্যার হলে সামাল দেওয়ার জন্য বাহিনী রাখতে হবে রাজ্যকে। তবে আদালতের পরামর্শ, বলপ্রয়োগ না করে কীভাবে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করতে হবে রাজ্যকে।
এ দিকে, হাইকোর্টের নির্দেশ মিলতেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছে কুড়মি সমাজ। পথে নামল পুলিশ ও প্রশাসনও। কড়া হাতে আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে বাঁকুড়া জেলার প্রতিটি এক্সিট পয়েন্টে শুরু হয়েছে নাকা চেকিং। আগামিকাল পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল বাঁকুড়া জেলায় বসবাসকারী কয়েক হাজার কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষের। প্রথম থেকেই এই আন্দোলনের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল এ রাজ্যের প্রশাসন। মঙ্গলবার হাইকোর্ট আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা করতেই পুলিশ ও প্রশাসনের সেই ভূমিকা আরও কঠোর হল। বাঁকুড়ার সারেঙ্গা, রাইপুর থানার জানডাঙা, বারিকুল থানার সাতখুলিয়া সহ প্রতিটি সীমান্তে কড়া নাকা শুরু হয়েছে। সংগঠিত ভাবে যাতে কোনও আন্দোলনকারী আন্দোলনস্থলে পৌঁছাতে না পারে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন কুড়মি নেতাকে আটকও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।