বাঁকুড়া: হাতে আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরেই নতুন বছর। আর নতুন বছরেই বাজতে চলেছে নির্বাচনী দামামা। দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayet Election) হাওয়ায় তপ্ত হচ্ছে বাংলার মাটি। তবে এরইমধ্যে শাসকদল তৃণমূলের (Trinamool Congress) অস্বস্তি বাড়িয়ে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে লাগাতার আসছে গোষ্ঠী কোন্দলের খবর। এবার ঠিকা শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে সামিল হলের তৃণমূলেরই অঞ্চল সহ সভাপতি। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে বাঁকুড়ার রাজনৈতিক মহলে।
ঝামেলার সূত্রপাত জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ওভারহেড ট্যাঙ্কে ঠিকা সংস্থার ক্লোরিন অপারেটার পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকের আধারথোল এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি ওভারহেড ট্যাঙ্ক রয়েছে। ওই ট্যাঙ্ক পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থা একাধিক ক্লোরিন অপারেটার ও সিভিল ওয়ার্কার পদে কাজের জন্য অস্থায়ীভাবে কিছু ব্যক্তিকে নিয়োগ করে। একটি পদে কাজ করতেন আধারথোলের অঞ্চলের সহ সভাপতি সুশান্ত বাউরি। তবে তাঁর অভিযোগ, মাস আটেক নিয়মিত কাজ করলেও তিনি কোনও বেতন পাননি। এদিকে মাস কয়েক আগে বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকে তৃনমূল নেতৃত্বের মধ্যে বড়সড় রদবদল হয়। ব্লক সভাপতি পদে দায়িত্ব পান অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাপতি পদে রদবদল হওয়ার পর সম্প্রতি তৃণমূলের আধারথোল অঞ্চল সহ সভাপতি সুশান্ত বাউরিকে ঠিকা সংস্থার ওই কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই পদে নিযুক্ত হন রাজা চৌধুরী ও স্বরুপ মাজি নামের দুই ব্যাক্তি।
সুশান্ত বাউরির অভিযোগ ওই দুই ব্যাক্তি তৃনমূলের বর্তমান ব্লক সভাপতির ঘনিষ্ঠ হওয়াতেই তাঁকের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগকে সামনে রেখে এদিন নিজের অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলের পতাকা হাতে সুশান্ত বাউরি হাজির হন ওভারহেড ট্যাঙ্কের সামনে। দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ওভারহেড ট্যাঙ্ক চত্বরের মূল গেটে তালা লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।
সুশান্ত বাউরি বলেন, “আমি এলাকার অঞ্চল সহ সভাপতি। ব্লক সভাপতির অত্যাচারেই আমরা আজ বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। আমাকে কাজ থেকে বাদ দিয়ে বাইরে থেকে ছেলে ঢোকাচ্ছে। নিজের লোকেদের কাজ দিচ্ছে। আমি দলকে জানিয়েছি বিষয়টা। সবাই বলছে দেখছি। এখনও কোনও উত্তর পায়নি। আমি ৮ মাস কাজ করেছি কোনও বেতন পাইনি। আমি চাই কাজে আমাকে বহাল রাখা হোক। নাহলে আরও বড় আন্দোলন করব।” সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কী করে নিয়োগ হয়েছিল আগে তা আমি জানি না। কারণ আমি সদ্য দায়িত্ব পেয়েছি। দলীয় অনুমোদন ছাড়া অবাঞ্চিতভাবে ওরা আন্দোলন করছে। আমি প্রশাসনকে বলেছি পদক্ষেপ করতে। একইসঙ্গে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকেও ঘটনার কথা জানিয়েছি।”