বাঁকুড়া: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই শিক্ষিকা হিসাবে নিযুক্ত স্ত্রী জেসমিন খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অধরা এই কাণ্ডের মূল পান্ডা শেখ সিরাজুদ্দিন। কার আশ্রয়ে শেখ সিরাজুদ্দিন এখনো অধরা তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি তৃণমূলই সিরাজুদ্দিনকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে শাহজাহানের মতোই। অপরদিকে, অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। অপরদিকে, এলাকাবাসী দাবি, চাকরি চুরির এমন গুরুতর অভিযোগ যার বিরুদ্ধে, সেই শেখ সিরাজুদ্দিন এখনো কীভাবে শালডিহা কলেজের অধ্যক্ষ পদে বহাল ?
২০১৫ সালের এসএসসির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া প্যানেলের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের নভেম্বরে কাজে যোগ দেন জেসমিন খাতুন। অভিযোগ, সেই সময় জেসমিন খাতুনের স্বামী শেখ সিরাজুদ্দিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। অভিযোগ, নিজের প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম ভেঙে বাতিল মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলের ভিত্তিতে স্ত্রীকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। সেই অভিযোগ সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে শিক্ষা দফতর।
নিয়োগে বেনিয়ম হয়েছে বুঝতে পেরে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান বাঁকুড়ার বিদ্যালয় পরিদর্শক। তদন্তভার নেয় সিআইডি (CID)। আদালতে হলফনামা দিয়ে নিয়োগে বেনিয়মের কথা কার্যত স্বীকারও করে নেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু তারপরও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়ে সিআইডি ও এসএসসি-র ভূমিকা। শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে গতকাল বেআইনি ভাবে নিয়োগ পাওয়া জেসমিন খাতুনকে সিআইডি গ্রেফতার করলেও এখনো অধরা জেসমিনের স্বামী শেখ সিরাজুদ্দিন। এসএসসি-র চেয়ারম্যানের পদ থেকে সিরাজুদ্দিনকে সরানো হলেও এখনো তিনি বাঁকুড়ার শালডিহা কলেজের অধ্যক্ষ পদে রয়েছেন।
এ দিকে, সিরাজুদ্দিন এখনো গ্রেফতার না হওয়ার পিছনে তৃণমূলের যোগ দেখছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দাবি অবিলম্বে সিরাজুদ্দিনকে হেফাজতে নেওয়া উচিৎ সিআইডি-র। কিন্তু শাহজাহানের মতোই সিরাজুদ্দিনকে আড়াল করছে তৃণমূল? সুভাষ সরকার বলেন, “সেই রকমই তো হচ্ছে। যিনি পুরো অপরাধ ঘটালেন তিনি রইলেন বাইরে। আর যিনি চাকরি পেলেন তাঁকে সাময়িকভাবে গ্রেফতার করা হল।”
প্রশ্ন উঠতেই তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের দাবি, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার তাঁকে এসএসসির পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। প্রয়োজন হলেই সিরাজুদ্দিনকে সিআইডি গ্রেফতার করবে। তালডাংরা তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “তদন্ত তো চলছে। একজনকে তো পোস্ট থেকে সরানো হয়েছে। এখানে আবার শাহজাহানের ভূত দেখার কী আছে?”