বাঁকুড়া: শুশুনিয়া পাহাড়ের আগুন সামান্য হলেও নিয়ন্ত্রণে। তবে সম্পূর্ণ নয়। এখনও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে আগুন জ্বলছে বলে দাবি স্থানীয়দের। গোটা ঘটনায় পরিবেশ নিয়ে সরব এলাকাবাসীর পাশাপাশি পরিবেশ নিয়ে চিন্তায় স্থানীয়রা।
শনিবার শুশুনিয়া পাহাড়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। দাউ-দাউ করে জ্বলে ওঠে গোটা পাহাড়। সন্ধে হতেই আগুনের লেলিহান শিখা চোখে পড়ে স্থানীয়দের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়ছেন, প্রথম আগুনের শিখা দেখা যায় পাহাড়ের মাঝের চূড়ায়। সেখান থেকে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে পাহাড়ের অন্যত্রও। শুকনো ঝড়া পাতায় লেগেই আগুন ধরেছে বলেছে অনেকের অনুমান।
গতকাল রাতভর বন কর্মীরা পাহাড়ের উপরে ব্লোয়ার দিয়ে ঝরা পাতার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। তারপরও রবিবার সকালে পাহড়ের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত আকারে আগুন জ্বলছে বলে দাবি স্থানীয়দের। ফি বছর শুশুনিয়া পাহাড়ে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই পাহাড়ের পরিবেশ নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন, বন দফতর থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়া জেলার অন্যতম বড় পাহাড় শুশুনিয়া। সবুজে ঢাকা এই পাহাড় দেখতে বহু পর্যটক আসেন জেলায়। জীব বৈচিত্র যথেষ্ট সমৃদ্ধ এই পাহাড়। নাম জানা ও অজানা লক্ষ-লক্ষ গাছ গাছালির পাশাপাশি বিভিন্ন শাখাচারী, সরিসৃপ, বন্য প্রাণী ও কীটপতঙ্গের বাস এই সুবিশাল পাহাড়ে। কিন্তু ফি বছর বসন্তের শুরুতেই এই পাহাড়ের ঝরা পাতায় জ্বলে উঠছে আগুন।
প্রাথমিকভাবে বন দফতরের ধারণা এই আগুন প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট আগুন নয়। সচেতনতার অভাবে অসাবধানতা বসত পর্যটকরা পাহাড়ের জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে ফেলতে পারেন। কিছু অসাধু মানুষ নির্দিষ্ট কোনও উদ্যেশ্যেও এই আগুন লাগিয়ে থাকতে পারেন। স্থানীয়দের ধারণা এইভাবে প্রতি বছর অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে পাহাড়ের বিভিন্ন গাছ গাছালি ছাড়াও জীবজন্তু ও সরিসৃপের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। ভারসাম্য হারাবে পাহাড়ের প্রকৃতি। পাহাড়ের এই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত তা খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে বন দফতর। এলাকার মানুষ চাইছেন যে কোনও মূল্যে বন্ধ হোক এই আগুন লাগানোর প্রবণতা।
এক এলাকাবাসী বলেন, “খুব ভয়ঙ্কর ঘটনা। বাঁকুড়ায় পর্যটকরা আসেন প্রকৃতি দেখতে। কিন্তু সেই প্রকৃতি পুড়ে ছাড়খাড় হয়ে গেলে পর্যটনের পাশাপাশি শেষ হয়ে যাবে প্রকৃতি ও পশুপাখি। ”
আরও পড়ুন: Sundarban: ভরা কোটালে বড় ফাটল নদী বাঁধে, আবারও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কার প্রহর গুনছে সুন্দরবন