করোনা মোকাবিলায় পথে বিধায়ক-মন্ত্রীরা, কেউ বিলি করলেন মাস্ক, কেউ চালু করলেন ‘আশ্বাস প্রকল্প’

tista roychowdhury |

May 20, 2021 | 12:10 PM

স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য়ে ১৫৭ জনের মৃ্ত্য়ু হয়েছে। করোনা থাবা বসিয়েছে ১৯ হাজার ৬জনের শরীরে। গত ২৪ ঘণ্টায়, ৭০ হাজার ১৩৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এদিনও সংক্রমণের শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা। এই জেলায় গত একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন  ৮১৭৭ জন।  

করোনা মোকাবিলায় পথে বিধায়ক-মন্ত্রীরা, কেউ বিলি করলেন মাস্ক, কেউ চালু করলেন আশ্বাস প্রকল্প
বাঁদিকে, আশ্বাস প্রকল্পের সূচনায় ফিরদৌসি বেগম, ডানদিকে, মেদিনীপুরের বাজারে জুন মালিয়া; নিজস্ব চিত্র

Follow Us

পশ্চিমবঙ্গ: রাজ্যে বেলাগাম করোনা (Corona) সংক্রমণ রুখতে ও লকডাউনের কোভিড বিধি যথাযথ পালনের নির্দেশ দিয়ে সচেতন করতে পথে নামলেন বিধায়করা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়, নিজ নিজ কেন্দ্রে সচেতনতার পাঠ দিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই, এই ছবি দেখা গেল বাংলা জুড়ে।

পশ্চিম মেদিনীপুর:

লকডাউনের পঞ্চম দিনের সকালে মেদিনীপুর শহরের বাজারে মাছ খাতে পরিদর্শনে আসেন তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া (June Malia)। করোনা সংক্রমণ রুখতে গত কয়েকদিন ধরে শহরের মূল বাজারটিকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে।  সেখানেই মানুষকে সচেতন করতে মাস্ক স্যানিটাইজার বিলি করলেন তারকা বিধায়ক। এমনকী, স্থানীয় এলাকায় কোতোয়ালি পুলিশের সহায়তায় মাইকিং করলেন নিজেই। তারকা বিধায়ক জানিয়েছেন, করোনা রুখতে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশাসনিক বৈঠক সেরেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার শালবনিতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আরও একদফা বৈঠক সারতে চলেছেন তিনি। এদিন, জুন (June Malia) বলেন, “করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতেই এই কড়াকড়ি। মানুষের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” উল্লেখ্য, এর আগে, কমিউনিটি কিচেনও চালু করেছেন মেদিনীপুরের বিধায়ক। ‘আহা রে আহার- বাড়ির মতো খাবার’ নামে কমিউনিটি কিচেনে (Community Kitchen) মূলত করোনা আক্রান্ত রোগী ও রোগীর পরিজনরাই পাবেন এমনটাই জানিয়েছিলেন জুন ও তৃণমূলের সদস্যরা। মেদিনীপুর শহরের ২৫টি ওয়ার্ডে মিলছে এই পরিষেবা।

 বীরভূম:

বৃহস্পতিবারের সকালেই বাজার পরিদর্শনে পথে নামলেন দুবরাজপুরের বিজেপি (BJP) বিধায়ক অনুপ সাহা। দুবরাজপুরের বাজারে গিয়ে ক্রেতাদের সঠিক করোনা বিধিপালনের পরামর্শ দিলেন বিধায়ক। বিক্রেতাদের বিনামূল্যে দেওয়া হল মাস্ক ও স্যানিটাইজার। বিধায়ক জানিয়েছেন, কোভিড মোকাবিলায় মানুষকে সতর্ক করতেই এই পদক্ষেপ করেছেন তিনি।

হাওড়া:

করোনা মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মাস্ক স্যানিটাইজার বিলি করে চলেছেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য় কারিগরী মন্ত্রী তথা বিধায়ক পুলক রায় (Pulak Roy)। উলুবেড়িয়া দক্ষিণের হিরাপুরে নিজেই গ্রামের ঘরে ঘরে বিনামূল্যে বিতরণ করলেন মাস্ক, স্যানিটাইজার। সঙ্গে বিলি করলেন ছোট চিরকূটও। সেই চিরকূটে দেওয়া থাকছে করোনায় কী কী করণীয়। একইসঙ্গে থাকছে  একটি সাহায্য়কারী নম্বরও। তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছেন, করোনা রুখতেই প্রশাসনের তরফে নতুন হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। যাতে কেউ করোনা আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা:

কোভিড মোকাবিলায় এ বার সোনারপুর উত্তরে চালু হল ‘আশ্বাস প্রকল্প’। সোনারপুর উত্তরের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক ফিরদৌসি বেগমের (Firdausi Begum)  উদ্য়োগে চালু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে করোনাকালে একইসঙ্গে তিনটি পরিষেবা পাবেন মানুষ। এই প্রকল্পের আওতায় কামালগাজি নেতাজি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে চালু করা হয়েছে অক্সিজেন পার্লার। যে কোনও ব্যক্তিই এখান থেকে অক্সিজেন পেতে পারেন। এছাড়া বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রয়োজন পড়লে ‘দুয়ারে’ পৌঁছবে অক্সিজেন। অক্সিজেন পরিষেবা ছাড়াও কোভিড আক্রান্ত ও তাঁর পরিবারকে বিনামূল্যে দুইবেলা খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। চালু করা হয়েছে একটি টোল ফ্রি নম্বরও। তৃণমূল বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের অনুপ্রেরণায় চালু হওয়া এই প্রকল্পটি ২৪ ঘণ্টাই কাজ করবে। মানুষের কাছে আশ্বাস পৌঁছে দেওয়াই আমাদের কাজ। আমরা সেই আশ্বাসের হাত টি রাখতে চাই।” উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে, সোনারপুরে একটি সেফ হোম তৈরিতেও উদ্য়োগী হয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। সোনারপুর পৌরসভার ব্যাঙ্কোয়েট হলেই তৈরি হয়েছে সেফ হোম।

প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য়ে ১৫৭ জনের মৃ্ত্য়ু হয়েছে। করোনা থাবা বসিয়েছে ১৯ হাজার ৬জনের শরীরে। গত ২৪ ঘণ্টায়, ৭০ হাজার ১৩৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এদিনও সংক্রমণের শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা। এই জেলায় গত একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন  ৮১৭৭ জন।  গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার হয়েছে ২৭.৭০ শতাংশ। আবার মোট সংক্রমণের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.২৩ শতাংশে। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। কোভিড মোকাবিলায় আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভার্চুয়াল বৈঠক। তাতে থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কীভাবে করোনাকে কাবু করা যায়, জেলাশাসকদের পথ বাতলাবেন মোদী।  মোট ৯টি রাজ্যের, সংক্রমণের হার সর্বাধিক এমন ৫৪টি জেলার জেলাশাসকরাও ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বেলাগাম উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা! বাংলায় গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড মৃত্যু

 

 

Next Article