‘ওয়ান পার্সেন্ট মেয়ে প্রভাবিত হলে, সেটাই আমার সার্থকতা’

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৌরভ পাল

Nov 27, 2021 | 12:29 PM

বালুরঘাট: চাঁদপানা মুখ। হাতে গাঢ় মেহেন্দি। পরনে লাল বেনারসি। সিঁথিতে সিঁদুর, কিছুটা ছিটকে এসে পড়েছে টিকালো নাকের উপর। কপালে লাল টিপের সঙ্গেই রয়েছে যজ্ঞ টিকাও। বাঁ হাতে তখনও মুঠো করা রয়েছে গাছকৌটো। শোলার সাদা তোড়া, ললাটে শোভিত টিকলিটা কিছুটা স্থানচ্যুত। বাপের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে মেয়ে। চিরায়ত বিষন্নতা, বিষাদের সুর — ‘পরের ঘরে’ যাওয়ার আগে […]

Follow Us

বালুরঘাট: চাঁদপানা মুখ। হাতে গাঢ় মেহেন্দি। পরনে লাল বেনারসি। সিঁথিতে সিঁদুর, কিছুটা ছিটকে এসে পড়েছে টিকালো নাকের উপর। কপালে লাল টিপের সঙ্গেই রয়েছে যজ্ঞ টিকাও। বাঁ হাতে তখনও মুঠো করা রয়েছে গাছকৌটো। শোলার সাদা তোড়া, ললাটে শোভিত টিকলিটা কিছুটা স্থানচ্যুত। বাপের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে মেয়ে। চিরায়ত বিষন্নতা, বিষাদের সুর — ‘পরের ঘরে’ যাওয়ার আগে মেয়ে মাকে বলে যাচ্ছে, “তোমার দেওয়া সব ঋণ শোধ করে যাচ্ছি।” না, এই ছবি এখানে নেই। আছে ছক ভাঙার সাহস। আছে আনন্দ। আছে চ্যালেঞ্জ।

সিঁদুর দান: নবদম্পতি অভিষিক্তা ও ধীরজ

কনকাঞ্জলিতে মায়ের আঁচলে চাল ফেলে দিয়ে মেয়ে বলে গেল, “এতদিন যা খেয়েছি তা শোধ করে দিতে পারলাম না”। হাতমুঠো চাল আরও একবার মায়ের আঁচলে ফেলে দিয়ে মেয়ে আবারও বলল, “এতদিন যা খেয়েছি তা শোধ করে দিতে পারলাম না।” এবার সংযোজন, “যে চালটা দিলাম সেটা দিয়ে ফ্রাইড রাইস করে রেখো, আমি আর ধীরজ অষ্টমঙ্গলায় এসে খাব।” তারপর গাড়িতে বসে ‘টাটা’ করে পরিবারের জন্য মেয়ে দিয়ে গেল উড়ন্ত চুমু।

সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। ওয়েডিং ফটোগ্রাফার শুভ মণ্ডলের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এই ভিডিয়োর সূত্র ধরেই নবদম্পতির খোঁজ শুরু করে TV9 বাংলা। জানা যায়, নববধূর নাম অভিষিক্তা দাস। পেশায় শিক্ষিকা। বালুরঘাটেরই আরেক শিক্ষক ধীরজ বসুর সঙ্গে সদ্য পরিণয়ে আবদ্ধ হয়েছেন তিনি।

যুগল মিলন: প্রেম থেকে পরিণয়ে অভিষিক্তা ও ধীরজ

দুজনের আলাপচারিতা ফেসবুকে। প্রেম ২০১২ সাল থেকে। সাড়ে ৯ বছর সম্পর্কের চড়াই উতারই পেরিয়ে অবশেষে একুশ সালের শীতে চার হাত এক হয় তাঁদের।

ধীরজ নিজে বামপন্থী। সিপিআইএমের সক্রিয় কর্মী। বালুরঘাটে ডিওয়াইএফআইয়ের নেতাও বটে। যদিও বিয়ে সেড়েছেন সনাতনী হিন্দু মতেই। তবে ছক ভেঙেছেন স্ত্রী। ‘মেয়ে পরের ধন’ — এই বদ্ধমূল ধারণাকে সপাটে ‘চড়’ মেরে হাঁটলেন ছক ভাঙা পথে। স্বামীর বামপন্থী চিন্তাধারার প্রভাবেই কি প্রভাবিত হলেন স্ত্রী? ধীরজের উত্তর, “আমি নিজে বামপন্থী। মা-বাবার ঋণ কখনও শোধ  করা যায় না। নিজে ছেলে হয়েও মা-বাবার ঋণ কোনও দিনই শোধ করতে পারব না। মেয়ে হয়েও কেউ পারবে না। আমার মতদর্শগত প্রভাব নিশ্চয়ই পড়েছে, তবে এখানে ওর ব্যক্তিসত্ত্বাই সর্বোচ্চ বিবেচিত।” আর অভিষিক্তার কথায়, “আমি একজন স্বাধীন চিন্তাধারার মেয়ে। আমার স্বামী এবং আমি, দুজনই বামমনস্ক। আমি যা করেছি তা এই সমাজটাকে পাল্টানোর ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র। জানি না, এটা কতটা ফলপ্রসূ হবে! তবে আমার জন্য যদি ওয়ান পার্সেন্ট মেয়েও প্রভাবিত হয়, আমার কাছে সেটাই সার্থকতা।”

 

 

বালুরঘাট: চাঁদপানা মুখ। হাতে গাঢ় মেহেন্দি। পরনে লাল বেনারসি। সিঁথিতে সিঁদুর, কিছুটা ছিটকে এসে পড়েছে টিকালো নাকের উপর। কপালে লাল টিপের সঙ্গেই রয়েছে যজ্ঞ টিকাও। বাঁ হাতে তখনও মুঠো করা রয়েছে গাছকৌটো। শোলার সাদা তোড়া, ললাটে শোভিত টিকলিটা কিছুটা স্থানচ্যুত। বাপের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে মেয়ে। চিরায়ত বিষন্নতা, বিষাদের সুর — ‘পরের ঘরে’ যাওয়ার আগে মেয়ে মাকে বলে যাচ্ছে, “তোমার দেওয়া সব ঋণ শোধ করে যাচ্ছি।” না, এই ছবি এখানে নেই। আছে ছক ভাঙার সাহস। আছে আনন্দ। আছে চ্যালেঞ্জ।

সিঁদুর দান: নবদম্পতি অভিষিক্তা ও ধীরজ

কনকাঞ্জলিতে মায়ের আঁচলে চাল ফেলে দিয়ে মেয়ে বলে গেল, “এতদিন যা খেয়েছি তা শোধ করে দিতে পারলাম না”। হাতমুঠো চাল আরও একবার মায়ের আঁচলে ফেলে দিয়ে মেয়ে আবারও বলল, “এতদিন যা খেয়েছি তা শোধ করে দিতে পারলাম না।” এবার সংযোজন, “যে চালটা দিলাম সেটা দিয়ে ফ্রাইড রাইস করে রেখো, আমি আর ধীরজ অষ্টমঙ্গলায় এসে খাব।” তারপর গাড়িতে বসে ‘টাটা’ করে পরিবারের জন্য মেয়ে দিয়ে গেল উড়ন্ত চুমু।

সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। ওয়েডিং ফটোগ্রাফার শুভ মণ্ডলের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এই ভিডিয়োর সূত্র ধরেই নবদম্পতির খোঁজ শুরু করে TV9 বাংলা। জানা যায়, নববধূর নাম অভিষিক্তা দাস। পেশায় শিক্ষিকা। বালুরঘাটেরই আরেক শিক্ষক ধীরজ বসুর সঙ্গে সদ্য পরিণয়ে আবদ্ধ হয়েছেন তিনি।

যুগল মিলন: প্রেম থেকে পরিণয়ে অভিষিক্তা ও ধীরজ

দুজনের আলাপচারিতা ফেসবুকে। প্রেম ২০১২ সাল থেকে। সাড়ে ৯ বছর সম্পর্কের চড়াই উতারই পেরিয়ে অবশেষে একুশ সালের শীতে চার হাত এক হয় তাঁদের।

ধীরজ নিজে বামপন্থী। সিপিআইএমের সক্রিয় কর্মী। বালুরঘাটে ডিওয়াইএফআইয়ের নেতাও বটে। যদিও বিয়ে সেড়েছেন সনাতনী হিন্দু মতেই। তবে ছক ভেঙেছেন স্ত্রী। ‘মেয়ে পরের ধন’ — এই বদ্ধমূল ধারণাকে সপাটে ‘চড়’ মেরে হাঁটলেন ছক ভাঙা পথে। স্বামীর বামপন্থী চিন্তাধারার প্রভাবেই কি প্রভাবিত হলেন স্ত্রী? ধীরজের উত্তর, “আমি নিজে বামপন্থী। মা-বাবার ঋণ কখনও শোধ  করা যায় না। নিজে ছেলে হয়েও মা-বাবার ঋণ কোনও দিনই শোধ করতে পারব না। মেয়ে হয়েও কেউ পারবে না। আমার মতদর্শগত প্রভাব নিশ্চয়ই পড়েছে, তবে এখানে ওর ব্যক্তিসত্ত্বাই সর্বোচ্চ বিবেচিত।” আর অভিষিক্তার কথায়, “আমি একজন স্বাধীন চিন্তাধারার মেয়ে। আমার স্বামী এবং আমি, দুজনই বামমনস্ক। আমি যা করেছি তা এই সমাজটাকে পাল্টানোর ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র। জানি না, এটা কতটা ফলপ্রসূ হবে! তবে আমার জন্য যদি ওয়ান পার্সেন্ট মেয়েও প্রভাবিত হয়, আমার কাছে সেটাই সার্থকতা।”

 

 

Next Article