বীরভূম: তিন দিন ধরে ঘেরাও বিশ্বভারতীর উপাচার্য। যেহেতু তিনি নিজের বাসভবন থেকে বেরোতে পারছেন না, তাই ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির প্রক্রিয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়। সোমবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিশ্বভারতী বলে অভিযোগ। তবে এই নোটিসে কোনও সই নেই। তাই প্রশ্ন থেকে গিয়েছে, নোটিসের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে।
সম্প্রতি, বিশ্বভারতী থেকে সাসপেন্ড করা হয় তিন পড়ুয়াকে। ফাল্গুনী পান, সোমনাথ সৌ এবং রূপা চক্রবর্তীকে তিন বছরের জন্য বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, পদার্থ বিজ্ঞানের দুই অধ্যাপক পীযুষকান্তি ঘোষ ও অরণি চক্রবর্তীকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাসপেন্ড করে বিশ্বভারতী। আচমকা এই সাসপেনশন ও পড়ুয়াদের বরখাস্তের নোটিসে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়া ও অধ্য়াপকদের একাংশ।
তিন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে ও তার কারণ জানতে চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন ছাত্রছাত্রীরা। উপাচার্যের বাড়ির বাইরে আন্দোলনে অনড় তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে একাধিক। শিক্ষকমহলের একাংশের প্রশ্ন, কেন এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করছেন না উপাচার্য? প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে উপাচার্য এই দায় কি এড়িয়ে যেতে পারেন, সে প্রশ্নও উঠছে।
যদিও এই ঘটনায় শাসকদলের মদতের ইঙ্গিত বিজেপির। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় বিশ্বাস করে না। বিচার ব্যবস্থা, সংবিধান সমস্ত কিছুকেই আক্রমণ করছে। এ ক্ষেত্রে উপাচার্য আক্রমণের বাইরে থাকবেন এটা তো সত্যিই ভাবার কোনও কারণ নেই। সর্বত্র যা চলছে, বিশ্বভারতীতেও তাই চলছে। তৃণমূল কংগ্রেসের যে সরকার তারা পশ্চিমবঙ্গকে একটা স্বাধীন দেশ ভাবতে শুরু করেছে। যেখানেই তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না, তাদের যথেচ্ছচারিতা যেখানে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, সেখানেই তৃণমূল এই আচরণ করছে। এটা তো পরিকল্পিত ভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা, অশান্তি পাকানোর চেষ্টা।”
#BREAKINg | তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের দাবিতে মিছিল পড়ুয়াদের। যে মিছিল শেষ হয় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে। পরবর্তীতে পড়ুয়ারা সেই গেটের সামনে ব্যানার লাগাতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে হয় ধস্তাধস্তি।
সব খবর বিস্তারিত: https://t.co/WHPSwzYdl8#VisvaBharati | #TV9Bangla pic.twitter.com/9DwyVzmNRI
— TV9 Bangla (@Tv9_Bangla) August 30, 2021
পাল্টা তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “এতে আমি লজ্জিত এবং মর্মাহত। কোনও উপাচার্য, বিশ্বভারতীর উপাচার্য এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারেন ভাবাই যায় না। আজকে উনি যা করছেন তা মূলত বিশ্বভারতীকে ধ্বংস করা। রবীন্দ্রনাথের রবীন্দ্র সংস্কৃতিকে উনি ধ্বংস করছেন। এই ঐতিহ্যশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে উপাচার্য রাজনীতি করছেন। উনি আসলে বিজেপির রাজনীতি করছেন। এর চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছু হতে পারে না। উনি অন্যায় করছেন, অপরাধ করছেন, অসামাজিক কাজ করছেন। সমস্ত মানুষের বিরুদ্ধে, রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্র সংস্কৃতির বিরুদ্ধাচরণ করছেন। ওনার উচিৎ এখনই ওখান থেকে পদত্যাগ করে চলে যাওয়া।” আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রীর পদ ধরে রাখতে উপনির্বাচন নিয়ে লাফালাফি, আগে পুরভোট করাতে হবে’, দাবি দিলীপের