বীরভূম: সম্ভাবনাটা ছিল, সূত্র মারফত যে খবর মিলছে, তাতে সেই সম্ভাবনা সত্যি হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। সোমবার সিবিআই- হাজিরা দিচ্ছেন না বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়াচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যেই সিবিআই-কে মেল করে জানিয়েছেন সেকথা। গরু পাচার মামলায় সোমবার বেলা ১১টায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। শুক্রবারই নিজাম প্যালেসের তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছে অনুব্রতকে। তারপর থেকেই শুরু হয়েছিল জল্পনা। এবারে আধিকারিকদের ‘কঠিন’ প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন অনুব্রত। কারণ ইতিমধ্যেই অনুব্রতর ছায়াসঙ্গীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই। শোনা যাচ্ছে, দেহরক্ষী সায়গলের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, যা অনুব্রতর জন্য চাপের হতে পারে। পাশাপাশি, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ পাথর ব্যবসায়ী টুলু মণ্ডল, বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান ও জিয়াউলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন আধিকারিকরা। সেখান থেকে বেশ কিছু নথি হাতে পেয়েছেন তাঁরা। যা থেকে অনুব্রত-যোগ স্পষ্ট হচ্ছে। অন্তত সিবিআই হাতে পাওয়া সূত্রগুলিকে এক মালায় গাঁথতে চাইছেন। আর তাতেই অনুব্রতকে এবার বেশ কিছু কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল।
বিষয়টি হয়তো আঁচ করতে পেরেছেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। তাই তিনিও নিজের মতো ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সিবিআই-এর ‘আনকমন’ প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার আগে হয়তো আইনজীবীদের থেকে ‘সাজেশন লিস্ট’ হাতে পেতে চাইছেন কেষ্ট। তাতে তাঁর ‘পিচ’ কিছুটা হলেও মসৃণ হতে পারে। তাই ইমেল করে সিবিআই আধিকারিকদের কাছে সময় চেয়ে নিলেন তিনি। সূত্রের খবর, শারীরিক অসুস্থতার কারণ জানিয়েছেন তিনি। সোমবার এসএসকেএমে চেকআপের দিন রয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, সমস্যা মিটলে নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, সোমবার হাজিরা দিছেন না কেষ্ট। যদিও সকালের দিকে ধরে নেওয়া হয়েছিল অনুব্রত রবিবারই কলকাতায় চিনার পার্কের আবাসনে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে বেলা তিনটের সময়ে বাড়ি থেকে বার হওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই সিবিআই-কে মেল করেন তিনি। মাঝের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জল্পনা সত্যি হল। আগের কয়েকবারের মতো চেনা কারণ দর্শিয়েই ‘কঠিন’ সোমবারের হাজিরা এড়ালেন তিনি।
বিরোধীরা অবশ্য এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “হাজিরা দিলে বেরোতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে। ওঁর খাঁচাও রেডি আছে। আমরা সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পারছি, সেগুলো যদি সত্যিই সিবিআই পেয়ে থাকেন, তাহলে আর ওঁ গেলে ফিরতে পারবেন না। একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি বলার সুযোগ নেই।”